আফজালুর রহমান উজ্জ্বল, কিশোরগঞ্জ :
শীতের প্রকোপ বাড়ায় বিপর্যস্ত কিশোরগঞ্জের সর্বস্তরের জনগন। শীতের ভোগান্তিতে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ, শিশু ও বৃদ্ধরা। অতিরিক্ত শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে পুরো কিশোরগঞ্জ বাসী।
পৌষ ও মাঘ দু’মাস শীতকাল। পৌষ মাস শেষ হতে আর মাত্র একদিন বাকি। এখনো সামনে আছে পুরো মাঘ মাস। শীতের তীব্রতা দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। হঠাৎ কনকনে শীত ও হিমেল হাওয়া অনুভব হওয়ায় সবচেয়ে বেশি দুভোর্গে পড়েছে ছিন্নমূল, অসহায় ও খেটে খাওয়া মানুষ। খড় কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছে নিম্ন আয়ের শীতার্ত মানুষ। শুক্রবার রাতে জেলার কিছু এলাকা ঘু্রে দেখা যায়- শিশু ও বৃদ্ধ পুরুষ-মহিলা খড়, গাছের ঢাল পাতা পুড়িয়ে আগুন পোহাচ্ছে।
স্থানীয় বয়বৃদ্ধ নুরুল ইসলাম, জমির উদ্দিন ও আবদুল কাদেরের সাথে কথা বললে তারা বলেন,কয়েকদিন ধরে শীত বাড়ায় ও ঘন কুয়াশার সাথে বাতাস থাকায় শীতে হাড় কাঁপুনি দিয়ে উঠে। তাই আগুন জ্বালিয়ে শরীর গরম করছি।
চায়ের দোকানদার রিফাত মিয়া জানান, শীত বাড়ায় লোকজন ঘর থেকে বের হতে চায় না, তাই বেঁচা কেনাও কম। আগে প্রতিদিন ২ থেকে ৩ হাজার টাকা বিক্রি করতাম। আজ ৭-১০ দিন ধরে শীত বেড়ে যাওয়ায় ১ হাজার টাকা বিক্রি করতে হিমশিম খাচ্ছি।
দিনমজুর চাঁন মিয়া বলেন, গত কয়েকদিন ধরে অতিরিক্ত শীত পড়ার কারনে জ্বর-সর্দি ও কাশি হয়েছে। কাজ কাম করতে পারছি না। এমনিতে কাজ কাম নেই। বৌ-পোলাপান নিয়ে কিভাবে সংসার চলবো সেই চিন্তায় আছি। কিছু টাকা ধার নিয়ে ঔষধ ও কাঁচা বাজার কিনে এনেছি।
কৃষক রতন মিয়া বলেন,শীতের সাথে ঘন কুয়াশার কারনে ধানের চারা মরে যাচ্ছে। তার পাশাপাশি সবজি মাঠের ফসল ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হচ্ছে। পোকার উপদ্রব বেড়ে যাচ্ছে। জমি বর্গা নিয়েছি। ধানের চারা মরে গেলে কিভাবে ধান চাষ করবো খুব চিন্তায় আছি। কয়েক দিন ধরে সকাল থেকে সূর্যের মুখ দেখা যাচ্ছে না। শীত পড়ার কারনে ঘরের ছেলে মেয়েদের জ্বর ও সর্দি, কি করবো ভেবে চিন্তায় পারছি না।
হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, শীত বাড়ার কারনে শিশুরাই বেশি বিপাকে পড়েছে। ঠান্ডাজনিত কারনে শ্বাসকষ্ট, জ্বরের রোগীর সংখ্যাই বেশি। তার পাশাপাশি বয়বৃদ্ধরা শ্বাসজনিত কারনে হাসপাতালে আসছে চিকিৎসা নিচ্ছে।
শিশু বিশেষজ্ঞ ডা: রানা আহমেদ জানান, হঠাৎ করে শৈতপ্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় শিশু ও বয়বৃদ্ধরা বিপাকে পড়েছে। হাসপাতালে আশা রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা দিয়ে নেবুলাইজার ব্যবহার করার পরামর্শ, শীতের ভারী পোশাক পরিধান ও প্রয়োজন ছাড়া ঠান্ডায় ঘর থেকে না বাহির হওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, অতিরিক্ত ঠান্ডা ও ঘন কুয়াশার কারনে ধানের চারা নষ্ট না হওয়ার প্রতিরোধে প্রতিদিন সকালে চারার উপর লাঠি অথবা দড়ি টেনে কুয়াশা সরিয়ে দিতে হবে। তার পাশাপাশি জমিতে পানি ধরে রাখতে হবে। একদিন পরপর সে পানি সরিয়ে ফেলে নতুন পানি দিতে হবে এবং ছত্রাকনাশক ওষুধ স্প্রে করতে হবে।
Posted ৯:৩৩ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১৩ জানুয়ারি ২০২৪
দৈনিক গণবার্তা | Gano Barta