বিমল কুমার রায়, দেবীগঞ্জ (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি।
পঞ্চগড়ে নিজের অনৈতিক কাজের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর সাংবাদিকের উপর তার দায় চাপিয়ে আদালতে মামলা করেছেন এক নারী ইউপি সদস্য। অথচ ভিডিও ভাইরালের বিষয়ে কোন কিছু জানেব না বলে দাবি করেন মামলার একমাত্র বিবাদী হরিশ চন্দ্র রায়। বর্তমানে তিনি দৈনিক সমকাল ও ডেইলি অবজারভার পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন। গত ১৩ মে(সোমবার) আদালতে মামলাটি দায়ের করেন দেবীগঞ্জ উপজেলার ০৯ নং দেবীডুবা ইউনিয়ন পরিষদের নারী ইউপি সদস্য রাধিকা রানী রায়। আদালত সিআইডিকে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেন।
এর আগে গত ০৫ মে ফেসবুকে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। এতে একটি ঘরে বিছানায় নারী ইউপি সদস্য রাধিকা রানী রায় ও নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান মদন মোহন রায়কে ঘনিষ্ঠ ভাবে দেখা যায়। এই নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এইদিকে মামলার নথিতে রাধিকা উল্লেখ করে বলেন, গত বছরের ১৪ই ফেব্রুয়ারী লক্ষীরহাট এলাকার শাহনাজ নামে এক নারীর বাড়িতে ভালবাসা দিবস উপলক্ষ্যে এক অনুষ্ঠানে তিনি, মদন মোহন রায়সহ আরো বেশ কয়েকজন উপস্থিত হন। সেখানে অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিতি সকলে নিজেদের মধ্যে মশকরা করার সময় এই ভিডিওটি জাহাঙ্গীর নামে এক ব্যক্তি মোবাইলে ধারণ করেন। পরে জাহাঙ্গীর তার মোবাইলটি নেদু মিয়া নামে এক ব্যক্তির নিকট বিক্রি করে দেন।
অভিযোগে রাধিকা আরো উল্লেখ করেন, সাংবাদিক হরিশ কৌশলে সেই আলোচিত ভিডিওটি সংগ্রহ করে তা ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে রাধিকার কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করেন এবং টাকা দিতে না পারায় সেই ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে নেদু মিয়ার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, যে ভিডিও নিয়ে কথা হচ্ছে সেই ভিডিও’র ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। আমি পুরনো ফোন কেন-বেচা করি। ফোন নেওয়ার সময় মালিকের উপস্থিতিতে ফোন রিসেট দেওয়া হয়। আর সাংবাদিক হরিশ রায়কে ভিডিও দেওয়াতো পরের কথা তার সাথে আমার কখনো সামনা-সামনি দেখা বা কথা হয়নি।
এইদিকে হরিশ চন্দ্র রায় ও রাধিকা রানী রায়ের একটি কল রেকর্ড প্রতিবেদকের নিকট আসে। সেখানে রাধিকা রানী ওই ঘটনার ভিডিও ধারণ ও ছড়িয়ে পরার পুরো বিষয়টির বর্ণনা দেন। ভিডিও ভাইরালের পর তা এডিট করে বানানো হয়েছে বলে নিজেদের পক্ষে দুইজনই সাফাই গাইলেও আদালতে মামলার নথিতে রাধিকা নিজেই স্বীকার করেছেন যে, গত বছর ১৪ ফেব্রুয়ারী তিনি ও নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান মদন মোহন রায় একই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। মামলা দায়ের করে রাধিকা নিজেই বিষয়টিকে স্বীকৃতি দিয়েছেন বলে নেটিজেনদের মধ্যে নতুন করে সমালোচনা শুরু হয়েছে।
মামলার বিষয়ে হরিশ চন্দ্র রায় বলেন, আমাকে হয়রানির উদ্দেশ্যে এই মামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় আমি কিছুই জানতাম না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ভাইরালের পরে রাধিকা নিজেই আমার কাছে এসে ভিডিও ধারণ ও ভাইরাল হওয়ার বিষয়টি আমাকে অবহিত করেন। এই বিষয়ে জানতে রাধিকা রানী রায়ের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
Posted ১২:২০ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪
দৈনিক গণবার্তা | Gano Barta