নিজস্ব প্রতিনিধি: রফতানি সম্প্রসারণ এবং প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে বন্দর ব্যবস্থাপনা আরো সহজীকরণের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা। গতকাল সকালে এফবিসিসিআই স্ট্যান্ডিং কমিটি অন পোর্ট অ্যান্ড শিপিংয়ের প্রথম সভায় তারা এ দাবি জানান।
সভায় অংশ নিয়ে কমিটির সদস্যরা জানান, চলমান বৈশ্বিক সংকটের কারণে দেশে ব্যবসা পরিচালন ব্যয় উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছেন স্থানীয় উদ্যোক্তারা। এমন পরিস্থিতিতে পণ্য বা কাঁচামাল আমদানি-রফতানির জটিলতা কমিয়ে আনা জরুরি।
তাদের মতে, চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরসহ অন্যান্য বন্দরে কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বৃদ্ধি, জেটির সীমাবদ্ধতা দূরীকরণ, হেভি লিফট স্থাপন, কাস্টমস ও এইচএস কোডসংক্রান্ত জটিলতা দূরীকরণ, রফতানি পণ্য জাহাজীকরণের সময় (লিড টাইম) হ্রাস, বন্দরগুলোয় টেস্টিং ল্যাবের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কনটেইনার খালাসের ক্ষেত্রে অযৌক্তিক চার্জ আদায় রোধ করা গেলে রফতানি খাত উপকৃত হবে।
কমিটির চেয়ারম্যান তরফদার মো. রুহুল আমিন বলেন, ‘বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বেসরকারি খাত। আগামীতে ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দেশের ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে। পণ্য ও কাঁচামাল আমদানি-রফতানিতে বিদ্যমান সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান করতে হবে।
পণ্য পরিবহন, জাহাজীকরণ ও কাস্টমসসহ পণ্য রফতানিতে বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে কমিটির সদস্যদের কাছে সুনির্দিষ্ট মতামত ও পরামর্শ চান এফবিসিসিআই পরিচালক এবং পোর্ট অ্যান্ড শিপিং বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ এএম মাহবুব চৌধুরী।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী বলেন, ‘পোর্ট এবং শিপিং সেক্টরে ৮-১০টি স্টেকহোল্ডার (অংশীজন) রয়েছে। সব পক্ষের সমস্যাগুলো পর্যালোচনা করে সুনির্দিষ্ট সুপারিশমালা তৈরির মাধ্যমে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।’
এদিকে বিকালে রফতানিবিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে দেশের বাজারে ডলারের মূল্য বৈষম্য কমিয়ে আনার দাবি জানান ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা। তারা বলেন, ‘রফতানির ক্ষেত্রে একজন ব্যবসায়ী যেখানে সর্বোচ্চ ১১০ টাকা কিংবা ১১০ টাকা ৫০ পয়সায় ডলার কেনে, পণ্যের কাঁচামালসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি আমদানির ক্ষেত্রে সেখানে ব্যবসায়ীদের প্রতি ডলারের বিপরীতে ১২০-১২২ টাকা গুনতে হয়, যা রীতিমতো বৈষম্য।’
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘বর্তমান ডলার সংকট মোকাবেলায় এ রফতানিবিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।’ রফতানির ক্ষেত্রে উদ্যোক্তাদের সমস্যা সমাধানসহ রফতানি বৈচিত্র্যকরণ এবং সম্প্রসারণে এফবিসিসিআই সব ধরনের সহযোগিতা দেবে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।
এ সময় তৈরি পোশাকসহ রফতানিমুখী শিল্পকে দেয় প্রণোদনা বন্ধ করা হলে রফতানি খাত ক্ষতির সম্মুখীন হবে বলে আশঙ্কা ব্যক্ত করেন ব্যবসায়ী নেতারা।
রফতানি বিষয়ক এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির চেয়ারম্যান মেহদী আলী। তিনি বলেন, ভূ-রাজনৈতিক কারণে বিশ্বজুড়ে ব্যবসা স্থানান্তরিত হচ্ছে। এ সুযোগ কাজে লাগাতে বাংলাদেশকে এখনই উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
সভা দুটিতে আরো উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক সৈয়দ মো. বখতিয়ার, পোর্ট অ্যান্ড শিপিংবিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির কো-চেয়ারম্যান আহমেদ সাখাওয়াত সেলিম চৌধুরী, এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক এবং রফতানিবিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ সালমা হোসেন অ্যাশ, এফবিসিসিআইয়ের মহাসচিব মো. আলমগীর, কমিটির সদস্যরা, ব্যবসায়ী নেতারা ও অন্যরা।
Posted ৪:১৬ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
দৈনিক গণবার্তা | Gano Barta