নির্বাচনে প্রার্থীদের দেওয়া হলফনামার অস্থাবর সম্পদ বিবরণীতে স্বর্ণ ও অন্যান্য মূল্যবান ধাতু ও পাথর নির্মিত অলঙ্কারাদির পরিমাণ ও অর্জনকালীন সময়ের মূল্যসহ উল্লেখ করার একটি কলাম রয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী বিএম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম নিজের নামে ২০ তোলা এবং স্ত্রীর নামে ১০০ তোলা স্বর্ণ রয়েছে জানালেও মূল্য উল্লেখ করেননি।
এ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ একে একরামুজ্জামান এই কলামে কোনো পরিমাণ উল্লেখ করেননি। মূল্য দেখিয়েছেন ৩০ হাজার টাকা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী, উপ-নির্বাচনে সদ্য নির্বাচিত এমপি শাহজাহান আলম সাজু তার নামে স্বর্ণের পরিমাণ দেখিয়েছেন ২০ তোলা। তবে এর মূল্য জানা নেই বলে উল্লেখ করেন। তার স্ত্রীর নামে এই খাতে দেখানো হয়েছে নগদ ১ লাখ টাকা। অর্থাৎ ১ লাখ টাকার স্বর্ণ রয়েছে তার। একই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মঈন উদ্দিনের নিজের নামে এবং স্ত্রীর নামে আড়াই লাখ টাকা করে ৫ লাখ টাকার স্বর্ণ ও অন্যান্য মূল্যবান ধাতু ও পাথর নির্মিত অলঙ্কারাদি থাকার উল্লেখ করা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এ বিষয়ে তার বিবরণীতে নিজের নামে বিবাহকালীন সময়ের ৩০ ভরি স্বর্ণ দেখিয়েছেন। অর্জনকালীন যার মূল্য উল্লেখ করেছেন ৯০ হাজার টাকা। এই হিসাবে প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম পড়েছে ৩ হাজার টাকা। তার স্ত্রীর নামে স্বর্ণ রয়েছে ৫৮ ভরি। মূল্য দেখানো হয়েছে ১৩ লাখ ২৩ হাজার টাকা। প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম পড়েছে ২২ হাজার ৮১০ টাকা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী, আইন-বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক ২০ ভরি স্বর্ণ দেখালেও দাম উল্লেখ করেননি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর) আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী ক্যাপ্টেন (অব.) এবি তাজুল ইসলাম তার নামে ৫০ ভরি স্বর্ণ দেখালেও মূল্য জানা নেই বলে উল্লেখ করেছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী ফয়জুর রহমান বাদল তার নামে ২০ তোলা স্বর্ণ দেখিয়েছেন। যার মূল্য উল্লেখ করেছেন ৬০ হাজার টাকা। তিনি তার স্ত্রীর নামেও ২০ তোলা স্বর্ণ থাকার কথা উল্লেখ করেছেন; কিন্তু মূল্য উল্লেখ করা হয়নি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া নিজের নামে ২০ ভরি এবং স্ত্রীর নামে ১২ ভরি স্বর্ণ দেখিয়েছেন। কিন্তু তাদের কারোর স্বর্ণেরই মূল্য নেই। মূল্য অজানা উল্লেখ করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা স্ত্রীর নামে ৭ ভরি এবং নির্ভরশীলদের নামে ৩৫ ভরি স্বর্ণ দেখিয়েছেন। এর মধ্যে স্ত্রীর নামে থাকা স্বর্ণের মূল্য দেখিয়েছেন ৩৫ হাজার টাকা এবং নির্ভরশীলদের স্বর্ণের মূল্য দেখিয়েছেন ১০ লাখ টাকা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের তৃণমূল বিএনপির মাইনুল হাসান স্বর্ণের পরিমাণ দেখিয়েছেন ৩০ ভরি; যার মূল্য জানা নেই বলে উল্লেখ করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী তারেক আহমেদ আদেল নিজের নামে দেখিয়েছেন ৪৫ ভরি স্বর্ণ; যার মূল্য ৭৫ হাজার ৩২০ টাকা। স্ত্রীর নামে রয়েছে আরও ৩০ ভরি; কিন্তু এর মূল্য অজ্ঞাত বলে উল্লেখ করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী একেএম মমিনুল হক সাঈদ তার নিজের নামে ৬০ ভরি এবং স্ত্রীর নামে ৫০ ভরি স্বর্ণ রয়েছে বলে উল্লেখ করলেও কোনো মূল্য দেখাননি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের ইসলামী ঐক্যজোট প্রার্থী মো. আবুল হাসানাত ৫০ তোলা স্বর্ণ দেখিয়েছেন তার নামে। তবে মূল্য দেখাননি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের বিএনএম প্রার্থী জামাল রানা তার নামে ৩০ তোলা স্বর্ণ দেখিয়েছেন হলফনামায়। তবে এর মূল্য জানা নেই বলে উল্লেখ করেন।
প্রার্থীদের হলফনামায় স্বর্ণের এমন দরদাম দেখানোর বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চলছে আলোচনা ও সমালোচনা।
Posted ৩:২৪ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩
দৈনিক গণবার্তা | admin