নিজস্ব প্রতিনিধি: দেশের অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, খেলাপি ঋণ, পুঁজিবাজার ও ব্যালেন্স অব পেমেন্ট এবং টাকার অবমূল্যায়নের মত বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। আশা করি বাংলাদেশ সফলতার সঙ্গে এসব প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়ে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাবে।
শনিবার (২০ জানুয়ারি) রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআিই) সভাপতি আশরাফ আহমেদ এমন মন্তব্য করেন।
এ সময় তিনি সমসাময়িক অর্থনীতি বিষয়ক ১২টি বিষয়বস্তুর ওপর বিস্তারিত চিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি ২০২৪ সালে ডিসিসিআইয়ের কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেন।
আশরাফ আহমেদ জানান, এবছর ঢাকা চেম্বার সিএমএসএমই, আমদানি বিকল্প শিল্পখাত, আর্থিক খাত, পুঁজিবাজার, ট্যাক্সেশন, বেসরকারি ও বৈদেশিক বিনিয়োগ, অর্থনৈতিক কূটনীতি, অবকাঠামো উন্নয়ন, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, কর্মসংস্থান ও মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়ন, এলডিসি উত্তরণ এবং স্মার্ট অর্থনীতি প্রভৃতি বিষয় সমূহের ওপর অধিকহারে গুরুত্বারোপ করবে এবং বিষয়গুলোর ওপর তিনি বিস্তারিত সুপারিশালা উপস্থাপন করেন।
জ্বালানি স্বল্পতার বিষয়ে ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, প্রয়োজনীয় জ্বালানীর অভাবে আমাদের শিল্প-কারখানা বন্ধ হওয়ায় অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে, বিষয়টি অস্বীকার করা যাবে না এবং বাণিজ্য সংগঠন হিসেবে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সমস্যাটি সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রতি আমরা আহবান জানাচ্ছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিবিএসসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রকাশিত তথ্যের স্বচ্ছতা উন্নয়নের সুযোগ রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপিত মূল প্রবন্ধে দেশের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের বিষয়ে তিনি বলেন, চলতি বছরে দেশের অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধির গতিধারা ফিরিয়ে আনতে বেসরকারি খাতকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। ভবিষ্যৎ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার ও ডিজিটাল কার্যক্রমে সম্পৃক্ততা বাড়ানোর জন্য সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি খুবই জরুরি বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
দেশের আমদানি বিকল্প শিল্পের উন্নয়নে সিএমএসএমইসহ স্ট্যার্ট উদ্যোক্তাদের ঋণ প্রাপ্তির সুবিধা সম্প্রসারণ এবং ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কার্যক্রম বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন আশরাফ আহমেদ।
তিনি বলেন, রফতানি বহুমুখীকরণ, এক্সপোর্ট ফ্যাক্টরিং, আন্তঃব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় এবং রেমিট্যান্স আহরণে আরও প্রণোদনা প্রদানের মাধ্যমে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি করা যেতে পারে। এছাড়াও তিনি পুঁজিবাজারে লেনদেন অবকাঠামো (ট্রেডিং ইনফ্রাস্ট্রাকচার) এবং অংশগ্রহণ বাড়াতে অলটারনেটিভ ট্রেড বোর্ড (এটিবি) ব্যবহার আরও বাড়ানোর প্রস্তাব করেন।
সম্প্রতি ঘোষিত মুদ্রানীতি সঠিক বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতে আরও গতিশীলতা ফিরে আসবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন- যা মূল্যস্ফীতি হ্রাস, রিজার্ভ বৃদ্ধি এবং ব্যালেন্স অব পেমেন্টের স্থিতিশীলতা আনয়নে সহায়ক হবে।
ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, অর্ন্তভক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি, রফতানির বহুমুখীকরণ এবং প্রবৃদ্ধি সহায়ক নীতি প্রণয়নের ওপর আমাদের আরও বেশি নজর দেওয়া প্রয়োজন। এছাড়া তিনি ট্যাক্স কোড ব্যবহারের মাধ্যমে একাউন্টিং ও রিপোর্ট প্রক্রিয়ার মধ্যকার সমন্বয় বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।
ডিসিসিআই সহসভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারী ও পরিচালক মো. জুনায়েদ ইবনে আলী প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
Posted ২:১৮ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২০ জানুয়ারি ২০২৪
দৈনিক গণবার্তা | Gano Barta