মোস্তাফিজার রহমান, দিনাজপুর:
দিনাজপুরে অসুস্থ মালিয়া এসএসসি পরীক্ষায় পেল ১১৯৭ মার্ক তার স্বপ্ন হতে চায় ডাক্তার। মালিয়া এপেন্ডিসাইডের প্রচন্ড যন্ত্রনা নিয়ে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে ১১৯৭মার্কসহ জিপিএ ৫অর্জন করে সকলকে অবাক করে দিয়েছে দিনাজপুর অক্সফোর্ড স্কুলের শিক্ষার্থী মোছাঃ মালিয়া।দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২০২৫শিক্ষাবর্ষে মালিয়া অক্সফোর্ড স্কুলের অধীনে রামডুবি, রানিপুর হাইস্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে।প্রত্যেক বিষয়ে ৯০এর উপরে মার্ক নিয়ে ১৩০০নম্বরের মধ্যে সর্বোচ্চ ১১৯৭ মার্ক পেয়ে গোল্ডেন প্লাসের কীতিত্ব অর্জন করে। মালিয়ার পরিবার সুত্রে জানা যায়,পরীক্ষা শুরুর আগ থেকেই শুরু হয় মালিয়ার পেটে যন্ত্রনা।সে ব্যথার কোন তোয়াক্কা না করেই অংশগ্রহন করে পরীক্ষায়।কিন্ত সেই ব্যথা তীব্র আকার ধারন করলে চিকিৎসকের শরনাপন্ন হলে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরিক্ষায় মালিয়ার এপেন্ডিসাইড ধরা পরে এবং দ্রুত অপারেশনের পরামর্শ দেয় চিকিৎসক।পদার্থবিদ্যা পরীক্ষার আগের দিন মালিয়ার শরীরে অস্ত্রোপচার চালানো হয়।এপেন্ডিসাইডের অপারেশনের পর মালিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে তার পরীক্ষা দেয়ার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেললেও,হার মানেনি মালিয়া। শুধুমাত্র তার মনোবল ও ইচ্ছা শক্তিতেই অস্ত্রপচারের একদিন পরেই পদার্থ বিদ্যা পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে সে।আর এভাবেই অসুস্থ শরীর নিয়ে মালিয়া একে একে সব পরীক্ষা শেষ করে।বৃহস্পতিবার ১০ জুলাই এসএসসি পরীক্ষার ভালো ফলাফল পাওয়ার পর খুশিতে পরিবারের সদস্যরা বলেন যে পরিশ্রম কখনো বিফলে যায় না সফলতা আসে তা মালিয়াকে দেখে।দিনাজপুর শহরের রামনগর এলাকার বাসিন্দা মোছাঃ মালিয়ার বাবা বিশিষ্ট ব্যবসায়ি আব্দুল মান্নান বলেন শরীরের তীব্র যন্ত্রণাকে উপেক্ষা করে,অসুস্থ অবস্থায় মালিয়ার পরীক্ষা দেয়াই যেখানে অসম্ভব হয়ে পড়েছিল,সেখানে সে যে এতো ভাল রেজাল্ট করবে,এটা সত্যি আমাদের সকলকে অবাক করে দিয়েছে।তবে তিনি বলেন আমার তিনি কন্যা সন্তানের কনিষ্ঠ কন্যা মালিয়া।ছোট থেকেই সে পড়াশুনায় অনেক মনোযোগী ও পরিশ্রমী।মালিয়ার পঞ্চম শ্রেনীতে সাধারন গ্রেডে বৃত্তি পাওয়াসহ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে একাধিক পুরষ্কার প্রাপ্তির রেকর্ড রয়েছে বলে জানান মালিয়ার বাবা।অসুস্থ শরীর নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে ভালো রেজাল্ট করার অনুভুতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে জানতে চাইলে মালিয়া প্রতিবেদককে জানান আমার এই রেজাল্ট প্রাপ্তির যে অনুভুতি তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।তবে তার এই কৃতিত্ত্ব অর্জনের জন্য সর্বোপ্রথম আল্লহর অশেষ রহমত ও তার খালা শাহনাজ পারভিন দিশার, সার্বক্ষণিক তার পাশে থেকে তাকে দেখাশুনা ও সহোযোগিতা করার অবদানেই আজকে তার এই প্রাপ্তি বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।সেই সাথে মালিয়া তার এই ভালো রেজাল্টের জন্য তার আব্বা,আম্মা ও বড় দুই বোনকেও সার্বক্ষণিক মনোবল জোগানোর জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।মালিয়া ভবিষ্যতে বাবা,মা ও নিজের স্বপ্ন পুরনে ডাক্তার হয়ে দেশ ও দশের সেবা করতে চায়।মালিয়ার বড়বোন মমতাজ বেগম বলেন অসুস্থ থাকার পরেও তার এমন ভাল রেজাল্ট সত্যি আমাদের মুগ্ধ করেছে।তবে তিনি বলেন প্রকৃত পড়াশুনা করলে ও অদম্য পরিশ্রমী হলে কোন বাধাঁই সফলতাকে দমিয়ে রাখতে পারে না।মালিয়ার মেজো বোন মোছাঃ শামান্তা বলেন আমরা এক প্রকার আশাই ছেড়ে দিয়ে ছিলাম যে,সে বুঝি আর পরীক্ষাই দিতে পারবে না।কিন্তু মালিয়ার অগাদ বিশ্বাস ও মনোবলই তার আজকের এই অর্জন।আজকে তার এই ভালো রেজাল্ট শুধু তার একার সফলতা নয়,আমাদের পরিবারের,তার শিক্ষকদের সকলের সফলতা।পরিশেষে মালিয়ার মা মনকুস আরা বেগম তার জন্য সকলের কাছে দোয়া চান,ভবিষ্যতেও সে যেনো এরকম ভালো রেজাল্ট করে তার কাঙ্খিত লক্ষে পৌঁছতে পারে। আল্লাহ যেনো আমার মেয়ের মনের আশা পূরণ করেন।
Posted ২:১২ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫
দৈনিক গণবার্তা | Gano Barta