এম নয়ন , ভোলা দক্ষিণ প্রতিনিধি: ভোলার মনপুরায় জেলেদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করতে গিয়ে গণধোলাইয়ের স্বীকার হয়েছেন ২ মৎস্য কর্মকর্তা। মেঘনায় অভিযানের নামে চাঁদা দাবী করায় ক্ষুব্দ হয়ে স্থানীয়রা এই গণধোলাই দেন। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে গণধোলাইয়ে আহত দুই মৎস্য কর্মকর্তাকে উদ্ধার করে মনপুরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে চিকিৎসা দেন। উক্ত ঘটনার জেরে মনপুরা থানায় শ্লীলতাহানীর চেষ্টা ও মারধরের অভিযোগ করেছেন এক বিধবা নারী । মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) সকাল ৭ টায় উপজেলার ১ নং মনপুরা ইউনিয়নের ঢাকার লঞ্চ ঘাট সংলগ্ন মেঘনা নদীতে এই ঘটনা ঘটে।
ঘটনাসূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা মৎস্য অফিসের মেরিন ফিসারিজ কর্মকর্তা মাহামুদুল হাসান ও ক্ষেত্র সহকারি মনির হোসেন অভিযানের নামে মেঘনায় জেলেদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে আসছিলো। জেলেরা নিয়মিত চাঁদা দিলেও মাঝে মধ্যে তারা জেলেদের জাল পুড়িয়ে দিতো। এতে দিনদিন ক্ষুব্দ হয়ে ওঠে জেলেরা। মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) সকালে ফের অভিযান করতে গিয়ে উপজেলার ১ নং মনপুরা ইউনিয়নের জেলেদের কাছে চাঁদা আদায়ের জন্য ট্রলারযোগে ধাওয়া করে তারা। ধাওয়া খেয়ে জেলেরা নদী তীরবর্তি এক বিধবা নারীর বাড়িতে আশ্রয় নেয়। এসময় দুই মৎস্য কর্মকর্তা বিধবা নারীর ঘরের দরজা ভেঙ্গে প্রবেশ করতে চাইলে ওই নারী বাঁধা দেয়। বাধায় খ্যান্ত না হয়ে জেলেসহ ওই নারীকে মারধর করে। জেলেদের ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা এসে ক্ষুব্ধ হয়ে দুই মৎস্য কর্মকর্তাকে গণধোলাই দেয়। পরে মনপুরা থানা পুলিশ খবর পেয়ে আহত দুই কর্মকর্তাকে উদ্ধার করে মনপুরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে চিৎিসা দেয়। এব্যাপারে উপজেলা মৎস্য অফিসের মেরিন ফিশারিজ কর্মকর্তা মোঃ মাহামুদুল হাসান জানান, অবরোধকালীন নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে আমরা অভিযান পরিচালনা করি। মেঘনা নদীতে পেতে রাখা জালের কাছে গেলে জেলেরা স্পীডবোট যোগে এসে আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে আমি ও আমার সহকর্মি ক্ষেত্র সহকারি মনির হোসেন গুরুতর আহত হই। পরে থানা থেকে পুলিশ গিয়ে আমাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। উপরস্ত মহলের নির্দেশনা মেনে এব্যাপারে মনপুরা থানায় অভিযোগ করা হবে। উক্ত ঘটনায় ওই বিধবা নারী মনপুরা থানায় এসে দুই মৎস্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানীর চেষ্টা ও মারধরের অভিযোগ করেন।
এব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (অতিরিক্তি দায়িত্ব) মারুফ হোসেন মিনার জানান, অনুমতিসাপেক্ষে আমাদের মেরিন ফিশারিজ কর্মকর্তা ও ক্ষেক্রসহকারি অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় জেলেরা তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে দুজনে গুরুতর আহত হয়। এব্যাপারে উপরস্ত মহলের পরামর্শক্রমে থানায় অভিযোগের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এব্যাপারে মনপুরা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ জহিরুল ইসলাম জানান, উপজেলার ১ নং মনপুরা ইউনিয়নের জেলেদের সাথে মৎস্য কর্মকর্তাদের মারামারি ঘটনার জেরে এক বিধবা নারী থানায় এসে অভিযোগ করেছেন। এছাড়া মৎস্য অফিসের পক্ষ থেকেও অভিযোগের পক্রিয়া চলছে। এবিষয়ে অভিযোগ পর্যালোচনা করে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।