আফজালুর রহমান উজ্জ্বল, কিশোরগঞ্জ :
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া গার্মেন্টস কর্মী এক তরুনী(১৮)কে অপহরণের পর দলবদ্ধভাবে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগে তিন বকাটে যুবককে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। শনিবার(২৭ জানুয়ারী) বিকাল ৩টার দিকে জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের তারাকান্দি ফাজিল মাদ্রাসা পাশে জনৈক রানা মিয়ার পরিত্যক্ত টিনের ঘরে নিয়ে পাঁচ যুবক ওই তরুণিকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। অপহরণের শিকার তরুণির বন্ধু পালিয়ে পুলিশকে জানালে ঘটনা¯’ল থেকে পুলিশ এ সময় তিনজনকে আটক করে। এ সময় অন্য দু’জন পালিয়ে যায়। আটককৃতরা হলো বীর পাকুন্দিয়া এলাকার আলী আকবরের ছেলে মো.কাউসার আহম্মেদ(২৪), একই এলাকার মো. খসরু মিয়ার ছেলে জুবায়েদ হাসান শুভ(১৮) ও চর পাকুন্দিয়া গ্রামের মুক্তার উদ্দিনের ছেলে তোফাজ্জল হোসেন রাজু(২৪)।
পুলিশ জানায়, গাজীপুরে গামেন্টস কর্মী বাড়িতে এসে তার বন্ধু সাব্বির হোসেন(১৮)কে নিয়ে অটোরিকসা নিয়ে শনিবার বিকেলে তারাকান্দি বাজারে ঘুরতে যান। অটো রিকসা চালক ছিলেন সাব্বিরের বন্ধু আশরাফ। এ সময় স্থানীয় বখাটে যুবক কাউসার(২৪), জুবায়েদ হাসান শুভ(১৮),মেহেদি হাসান(২২), হৃদয় (৩২), বাবু(২২),তোফাজ্জল হোসেন রাজু(২৪), ও ইয়াসিন (২৫) অটোরিকসাটিকে তারাকান্দি ফাজিল মাদ্রাসার মাঠে নিয়ে যায়। সেখানে মুক্তিপন বাবদ তারা ভিকটিমের বন্ধু সাব্বিরের কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করে। এ টাকা না দিলে অটোরিকসাসহ তরুণীকে আটকে রাখার হুমকি দেয়। বকাটেরা অটোরিকসার চালক ও ভিকটিমের বন্ধু আশরাফকে মাদ্রাসার মাঠে রেখে ভয়ভীতি দেখিয়ে তরুণীকে মাদ্রাসার পাশে জনৈক রানা ভূইয়ার একটি পরিত্যক্ত টিনের ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে প্রথমে হৃদয়,পরে মেহেদি, বাবু,কাউসার, এবং জোবায়ের পারাক্রমে ধর্ষণ করতে থাকে। ঘটনার সময় মাদ্রার পাশে থাকা সাব্বিরের বন্ধু আশরাফ মুক্তিপণের টাকা সংগ্রহের কথা বলে কৌশলে থানায় এসে পুলিশকে জানায়। পাকুন্দিয়া থানার এসআই দ্বীন ইসলাম,এসআই নাজিম উদ্দিন, এএসআই রাকিব উজ্জামান খান, তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে ভিকটিমকে উদ্ধার করে ও তিনজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। এ সময় তাদের সঙ্গে থাকা একটি মোটরসাইকেল জব্দ করে।
কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মো.আল আমিন হোসাইন ঘটনার বিবরণ উল্লেখ করে প্রেস রিলিজ করে জানান, একের পর এক যুবক কর্তৃক জোরপূর্বক ধর্ষিত হয়ে যাচ্ছিল তরুণীটি। মাটি থেকে উঠে দাঁড়াতে না পারলেও বারবার পাশবিকতার শিকারে কুকড়ে যাচ্ছিল । ইতোমধ্যেই পাঁচজন কর্তৃক ধর্ষিত হয়েছে। পুলিশের অবস্থান বুঝে সটকে পরে প্রায় সকল অপরাধী। তবে কাউসার ও জুবায়েদ হাসান শুভকে পালানোর সময় দৌড়ে ধরে ফেলেন এসআই (নি.) দীন ইসলামের টীম। পরে পুলিশের অভিযানে তোফাজ্জল হোসেন রাজু নামে তাদের এক সহযোগীকেও গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি আরো জানান,ধর্ষণের ঘটনায় রবিবার পাকুন্দিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ভিকটিমকে চিকিৎসার জন্য কিশোরগঞ্জ ২৫০শয্যার জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়াও ধর্ষণের ঘটনা প্রমাণে সহায়ক আলামত জব্দ করা হয়েছে।
ঘটনার সংবাদ পেয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ পিপিএম (বার) ও পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনা স্থল পরিদর্শন এবং ভিকটিম ও গ্রেপ্তারকৃত আসামিদেরকে জিঞ্জাসাবাদ করেন। এ ঘটনায় জড়িত পলাতক আসামিদেরকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি জানান।