নিজস্ব প্রতিনিধি: কৃষিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ায় পর ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৃষকদের সঙ্গে সারা দেশে উঠান বৈঠক করার কর্মপরিকল্পনার কথা জানান কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুস শহীদ। এর অংশ হিসেবে প্রথম উঠান বৈঠক করলেন তিনি। গতকাল মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের কৃষক ইন্দু ভূষণ পাল নিরুর উঠানে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে পাঁচ শতাধিক কৃষক উপস্থিত ছিলেন। আমন ধান কাটার এ মৌসুমে গ্রামের জমি এখনো পতিত পড়ে আছে কেন, কৃষকের কাছে সে বিষয়ে বিস্তারিত শোনেন কৃষিমন্ত্রী।
মৌলভীবাজার জেলায় চাষযোগ্য পতিত জমিকে কীভাবে চাষের আওতায় আনা যাবে, কোন জমিতে কী ফসল ফলানো যাবে, সে বিষয়ে আগামী ৫০ দিনের মধ্যে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নে স্থানীয় কৃষি বিভাগকে নির্দেশ দেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘চাষযোগ্য জমি অনেক। এখন বোরোর মৌসুম, অথচ আমন ধান কাটার পর এখানে সব জমি পতিত পড়ে আছে। এসব জমিকে কীভাবে কাজে লাগানো যায়, সে উপায় খুঁজে বের করতে হবে।
সেচের সমস্যা নিরসনে বিএডিসিকে কর্মপরিকল্পনা নেয়ার নির্দেশ দেন কৃষিমন্ত্রী। শ্রমিক সংকট নিরসনে ভর্তুকি মূল্যে আরো বেশি করে কৃষি যন্ত্রপাতি দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
উঠান বৈঠক প্রসঙ্গে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষকদের সঙ্গে উঠান বৈঠক করে স্থানীয় পর্যায়ে কী কী সমস্যা আছে তা জেনে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে লক্ষ্য—এক ইঞ্চি জমিও পতিত রাখা যাবে না, তা অর্জন করে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি এবং দেশকে খাদ্যে উদ্বৃত্ত করব।’
কৃষকের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা আরো বেশি করে ফসল ফলান। সরকার আপনাদের পাশে আছে, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সব স্তরের কর্মকর্তারা আপনাদের পাশে আছে। আপনাদের প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতা প্রদান করা হবে। উৎপাদন আরো বাড়াতে পারলে কারো পেটে ক্ষুধা থাকবে না, খাদ্য আমদানি করতে হবে না, বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে হবে না।’
উঠান বৈঠকে মৌলভীবাজার জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু তালেব, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অর্ধেন্দু কুমার দেব, উপজেলা কৃষি অফিসার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
কৃষক ইন্দু ভূষণ পাল, উত্তম দেবনাথ, আতর আলী, মহিবুর রহমান প্রমুখ তাদের সমস্যা ও দাবি তুলে ধরেন। কৃষকরা গভীর নলকূপ স্থাপন, খাল খনন, স্লুইস গেট সংস্কার ও নদী-জলাশয় দখলদার মুক্ত করে সেচের ব্যবস্থা, দেশী জাতের বদলে বিএডিসির উন্নত জাতের আলুর বীজ সরবরাহ বৃদ্ধি, লাউ, কুমড়া, আলু চাষে প্রণোদনা, ভরা মৌসুমে আনারস, লেবুর ন্যায্যমূল্য পেতে শ্রীমঙ্গলে জুস ফ্যাক্টরি ও কৃষি প্রক্রিয়াকরণ প্রতিষ্ঠান স্থাপনের দাবি জানান।
এছাড়া ভর্তুকি মূল্যে ছোট ছোট কৃষিযন্ত্র দেয়ার দাবি জানান, যাতে কৃষক নিজেই যন্ত্র চালাতে পারেন এবং কৃষকের ঘরেই প্রয়োজনীয় কৃষিযন্ত্রের মজুদ থাকে।
Posted ৪:১৪ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ২৮ জানুয়ারি ২০২৪
দৈনিক গণবার্তা | Gano Barta