স্টাফ রিপোর্টার : আগামী জাতীয় নির্বাচন জুলাই সনদের আলোকে ও সংস্কারের ভিত্তিতে করার দাবি জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ মোট সাতটি প্রস্তাব দিয়েছে দলটি। বুধবার (১৩ আগস্ট) প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীনের সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। দলের মহাসচিব ইউনুস আহমাদের নেতৃত্বে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব ও দলীয় মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা সিইসির সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা আলোচনা করেছি। আমাদের চাওয়া হলো—আগামী নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়। ঐকমত্য কমিশনের সনদ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। সেখানে আমাদের প্রধান দাবি ছিল—আগামী নির্বাচন যাতে এই সনদের ভিত্তিতে হয়। আতাউর রহমান আরো বলেন, ‘শতভাগ জনমতের মূল্যায়নের মাধ্যমে একটি কার্যকর সংসদ গঠনের লক্ষ্যে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের জন্য কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের সময় ঘোষণার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা একটু ব্যতিক্রম হয়েছে যে, জুলাই সনদের জন্য যে সময় রাজনৈতিক দলগুলো আলোচনায় আছে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন আলোচনা চলছে, এগুলো চূড়ান্ত হওয়ার আগে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের একটা সময় ঘোষণা করে দিলেন। এতে আমরা মনে করি যে, এই জুলাই সনদের আর এই জাতীয় ঐকমত্যের বিষয়টাকে উনি অনেকটাই প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেলেছেন। এখন এটার পরিণতি কী হবে সেটা নিয়ে আমরা শঙ্কিত। প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন্দ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান এবং যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম।
বৈঠকে ইসলামী আন্দোলনের পক্ষে যে সাত দফা প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে, সেগুলো হলো—
১. বিগত ক্ষমতাসীন দলগুলো যেভাবে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনকে দলীয় এবং ক্ষমতার অশুভ প্রভাব খাটিয়ে বিতর্কিত ও ব্যর্থ করেছে, তা থেকে উত্তরণের জন্য সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।
২. সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচনী কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দায়িত্বশীল এবং দলনিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের জন্য প্রশিক্ষণ ও দিকনির্দেশনা দিতে হবে। এর ব্যত্যয় হলে তাদের আইনের আওতায় এনে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৩. সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে দেশের গৌরব সেনাবাহিনীকে শুধু স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নয়, বরং প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে সেনা সদস্য মোতায়েনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. জুলাই জাতীয় সনদের আলোকে ও সংস্কারের ভিত্তিতে জাতীয় এবং সকল স্থানীয় নির্বাচন করতে হবে।
৫. শতভাগ জনমতের মূল্যায়ণের মাধ্যমে একটি কার্যকর সংসদ গঠনের লক্ষ্যে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচনের জন্য কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।
৬. ফ্যাসিস্ট, খুনি, মানবতাবিরোধী অপরাধী ও আধিপত্যবাদী শক্তির এজেন্ট আওয়ামী লীগ ও তার সকল দোসর ও সহযোগী দলকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা এবং তাদের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে।
৭. দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, দখলবাজ, টেন্ডারবাজ ও খুনিদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে।
Posted ৮:২২ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৩ আগস্ট ২০২৫
দৈনিক গণবার্তা | Gano Barta