গণবার্তা রিপোর্টার : শাহরুখ খানের বহু ভক্ত মনে করেন তিনি আরো আগেই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেতে পারতেন। জওয়ানের চেয়ে তার অন্য অনেক সিনেমা এগিয়ে আছে।ক্যারিয়ারের ৩৩ বছর পার করে সেরা অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাচ্ছেন শাহরুখ খান। গতকাল ভারতের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে এ ঘোষণা করা হয়। রাতে এক ভিডিও বার্তায় শাহরুখ এই সিদ্ধান্তের জন্য জুরি সদস্য ও অন্যান্যদের ধন্যবাদ জানান। তবে শাহরুখ পুরস্কার পাচ্ছেন খবরটি প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই শুরু হয় নানা আলাপ। জওয়ানের জন্য তাকে পুরস্কার দেওয়ার বিষয়টি অনেকেই মানতে পারছেন না। ইন্টারনেট দুনিয়ায় এই নিয়ে তুমুল শোরগোল। তারা মনে করেন শাহরুখ খান আরো আগেই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছেন এবং জওয়ানের চেয়ে অন্য অনেক সিনেমা আছে যেগুলোর জন্য পুরস্কার দাবী করতে পারেন শাহরুখ। এমন কিছু সিনেমা নিয়েই আলাপ করা যাক।
কাভি হা কাভি না: ১৯৯৪ সালে মুক্তি পায় সিনেমাটি। কুন্দন শাহ্ পরিচালিত এ সিনেমায় শাহরুখ অভিনয় করেছেন সুনীল চরিত্রে। তার এই চরিত্রটির সরলতার কারণে তাকে ভালোবেসেছেন বহু দর্শক। এছাড়া সমালোচকরাও প্রশংসা করেন সুনীল চরিত্রে শাহরুখ খানের অভিনয়। অনেকে মনে করেন এই সিনেমার জন্যে ক্যারিয়ারের শুরুতেই জাতীয় পুরস্কার পেতে পারতেন শাহরুখ খান।
ডর: ‘আই লাভ ইউ ক… ক… ক… কিরণ’ সংলাপটি আজও জনপ্রিয়। ১৯৯৩ সালে মুক্তি পাওয়া যশ চোপড়ার ‘ডর’ সিনেমায় শাহরুখ বলেছিলেন এই সংলাপ। সেই সময়ে খল চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন শাহরুখ খান। সাইকো প্রেমিকের এই চরিত্রটি নব্বইয়ের দশকে অনেককে প্রভাবিত করেছে। এ সিনেমায় শাহরুখের অভিনয় আজও প্রশংসিত।
দিল সে…: মণি রত্নমের মতো প্রশংসিত পরিচালকের সঙ্গে দুর্দান্ত একটা সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন শাহরুখ খান। ছাইয়া ছাইয়া ১৯৯৮ থেকে জনপ্রিয় হলেও সেই সময় ‘দিল সে…’ বক্স অফিসে হিট হয়নি। সিনেমাটি অনেকদিন কেউ মনেও রাখেনি। এখন দিল সে নিয়ে অনেক আলাপ হয়। অমরকান্ত চরিত্রে শাহরুখের অভিনয় নিয়েও কথা হয়। নির্দ্বিধায় অনেক সমালোচকও বলেন এই সিনেমার জন্য শাহরুখ খান জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেতে পারতেন।
দেবদাস: শাহরুখ খানের আরেক মাইলফলক ‘দেবদাস’। ততদিনে তিনি কিং খান হয়েই গেছেন। সঞ্জয় লীলা বানসালির পরিচালনায় দেবদাস হয়েছিলেন ২০০২ সালে। সিনেমাটির একাধিক দৃশ্য ও শাহরুখ খানের অভিনয় নিয়ে আজও আলোচনা হয় সিনেমাবোদ্ধাদের মধ্যে। অনেকেই মনে করেন, আর কিছু না হোক, এ সিনেমার ক্লাইম্যাক্সের জন্য শাহরুখ খান যে কোনো বড় পুরস্কার পেতে পারেন।
স্বদেশ: আশুতোষ গোয়ারিকরের পরিচালনায় স্বদেশ মুক্তি পায় ২০০৪ সালে। দেশপ্রেম নিয়েই সিনেমাটি তবে ছিল না এ সময়ের মতো উগ্র জাতীয়তাবাদ। মোহন ভার্গব চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন শাহরুখ খান। নিজের গ্রামের দুর্দশা দেখে নাসার চাকরি ছেড়ে স্বদেশে ফিরে আসেন তিনি। শাহরুখ খানের ঘোর সমালোচকরাও বলেন এ সিনেমায় এক মুহূর্তের জন্য সামান্য অতি-অভিনয় করেননি শাহরুখ খান। স্বদেশের জন্যই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের দাবীদার ছিলেন শাহরুখ খান।
মাই নেম ইজ খান: করণ জোহর তার নিজস্ব ধাঁচ থেকে যোজন দূর সরে গিয়ে নির্মাণ করেছিলেন ‘মাই নেম ইজ খান’। দেখিয়েছিলেন নাইন ইলেভেনের পর মুসলিমদের জীবন যাপন। ২০১০ সালে মুক্তি পাওয়া সিনেমায় শাহরুখ খান অভিনয় করেছেন অ্যাসপারপগাস সিনড্রোম আক্রান্ত এক ব্যক্তির চরিত্রে। রিজওয়ান খান যে সময় শারীরিক-মানসিক প্রতিবন্ধকতা ডিঙিয়ে নিজের পরিবার ও জীবন গড়তে শুরু করেন তখনই নাইন ইলেভেনের পর সবার জীবন বদলে যায়। এ সিনেমায় রিজওয়ানের চরিত্রে অনবদ্য অভিনয় করেন শাহরুখ খান। এমনকি এখনো রিজওয়ান চরিত্রের ছাপ তার মধ্যে দেখা যায়। গতকাল শাহরুখ খানের ভক্তরা মাই নেম ইজ খানের কথাও বারবার উল্লেখ করেছেন তাদের মন্তব্যে কথায় আছে, কিছু কীর্তিমানের হাতে গিয়ে পুরস্কারই ধন্য হয়। তেত্রিশ বছরের ক্যারিয়ারে শাহরুখ খান সারা বিশ্ব থেকে যত সম্মাননা পেয়েছেন তারপর এখন তার হাতে উঠে ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারই ধন্য হলো হয়ত।
Posted ১০:৩২ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ০২ আগস্ট ২০২৫
দৈনিক গণবার্তা | Gano Barta