ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে রয়েছে জান্নাতুল সুমাইয়া হিমির একাধিক নাটক। ঈদের ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’তে গাওয়া তার গানও ট্রেন্ডিংয়ে আছে। কদিন আগেই ১০৯টি নাটকের এক কোটি করে ভিউ স্পর্শ করেছেন এই অভিনেত্রী। ফলে তাকে অনেকেই ‘ভিউয়ের রানী’ খেতাব দিয়েছেন।
এবার এই ‘ভিউ’কে কিভাবে দেখেন জানিয়েছেন হিমি। তার ভাষ্য, ‘ভিউ নিয়ে আমার আলাদা কোনো দর্শন নেই। মনে হয়, এটা যেকোনো প্রজেক্টের একটা অংশ। একটা প্রজেক্টের চিত্রনাট্য ভালো হতে হয়, এরপর লোকেশন, আর্টিস্ট ও পরিচালকের সমন্বয়ে কাজটা হয়। তাই ওই কাজ অবশ্যই চাই মানুষ দেখুক। এত কষ্ট করে আমরা কাজ করি, তাই যখন ভিউ হয়, ভালো লাগে। কারণ, মানুষ দেখছে বলেই ভিউ হচ্ছে। প্রশংসা করছে, আলোচনা–সমালোচনাও করছে। এটা তো অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। ভিউর বিষয়টা সরাসরি জড়িত প্রযোজকদের জন্য, এখান থেকে টাকা উঠে আসার ব্যাপার থাকে। এখন আমার কাজ যদি না-ই দেখে, আমাকে নিয়ে প্রযোজক তো পরের প্রজেক্টে ভাববে না। তারা হয়তো বিকল্প সিদ্ধান্তে যাবে।’
নাটক ও গান ট্রেন্ডিং-এ থাকা নিয়ে হিমি বলেন, ‘ছোটবেলায় ছায়ানট ও কচিকাঁচায় গান শিখেছি, তাই গান নিয়ে আলাদা একটা নস্টালজিয়া কাজ করে। গান এবার মানুষ দেখেছে বা শুনেছে, ট্রেন্ডিংয়েও এসেছে, এটা অবশ্যই ভালো লেগেছে। নাটক হচ্ছে প্রতিদিন। নাটকে অভিনয় একটা চাকরির মতো হয়ে গেছে। গানও মানুষ এবার নাটকের মতোই গ্রহণ করেছে দেখলাম, এটা ভালো লেগেছে। আমার কাছে অনেক সারপ্রাইজিং ছিল। ভালো লাগার আরও কারণ, আমার সহশিল্পী, কাছের মানুষ ও ভক্তরা গানের জন্য শুভকামনা জানিয়েছেন। তাই গানের বিষয়টা আলাদা করে গুরুত্ব বহন করে কি না, এখনই বলতে পারছি না। কত ভিউ হয়েছে, এটার চেয়ে আমার কাজগুলো আমার কাছে ভালো লাগছে কি না, সেটাই বিষয়। সেটাই গুরুত্বপর্ণ।’
গানে নিয়মিত হবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নিয়মিত কতটুকু হতে পারব, জানি না। যদি এরপর মৌলিক কোনো গান গাওয়ার প্রস্তাব আসে, করব। আমার মনে হয়, একটা গণ্ডির মধ্যে আটকে না থেকে যদি পারি বা মানুষ যদি গ্রহণ করে, আমার পছন্দের কাজ তো আমি করতেই পারি। গানে অত বেশি নিয়মিত না হলেও শখের বশে গান গাওয়া হবে।’
অনেকের অভিযোগ, হিমির অভিনীত নাটক ও চরিত্রগুলো প্রায় কাছাকাছি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের তো গল্পের ক্ষেত্রে অনেক স্বল্পতা থাকে, অনেক চরিত্রই আমরা দেখাতে পারি না; ধর্মীয় ও রাজনৈতিক বিভিন্ন বিষয় আমাদের মাথায় রাখতে হয়। তাই আবার কিছু কিছু গল্প ভিন্ন হলেও আমারই বয়সী একটা মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া মেয়ের চরিত্র করতে পারি না বা বিবাহিত নারীও করা যায় না। তবে আমরা চেষ্টা করি সব চরিত্র কাছাকাছি যেন না হয়। চেষ্টা করি ভিন্ন রকম গল্প ও ভিন্ন পটভূমিতে নিজেকে উপস্থাপন করতে। তবে হয়তো অনেক সময় সীমাবদ্ধতার কারণে সব ধরনের চরিত্র করতে পারি না। এটাও ঠিক, অনেকগুলো কাছাকাছি। একটু ঝগড়াটে চরিত্র, বয়ফ্রেন্ড–গার্লফ্রেন্ড টাইপ চরিত্র মানুষের চোখে যায় বেশি; তাই বেশির ভাগ কাছাকাছি মনে হয়। আমি কিন্তু চেষ্টা করি। গ্রামীণ পটভূমির, বাস্তবধর্মী গল্পেও কাজ করার চেষ্টা থাকে।’
বর্তমানে ঈদের কাজ নিয়ে ব্যস্ত এই অভিনেত্রী। তিনি জানান, ‘ঈদের কাজ এখনো শেষ হয়নি। ঈদের এক-দুই দিন আগপর্যন্তও হয়তো শুটিং চলবে। কী কী কাজ আসবে, তা এখনো নিশ্চিত নই। এখন পর্যন্ত যে কয়টি কাজ করেছি, সেসবের মধ্যে আছে গ্রামের নাটক, সিরিয়াস গল্প, পারিবারিক গল্পও। কমেডি কনটেন্ট তো নিয়মিত হিসেবে থাকছে। আজ (সোমবার) শুটিং করছি মুসাফির রনির পরিচালনায় সিরিয়াস গল্পের কাজ। একটি বস্তিতে শুটিং করছি। এবার ঈদে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের গল্পেও পাওয়া যাবে। সব ধরনের গল্পের একটা সমন্বয় রাখার চেষ্টা করছি।’
Posted ১২:৪১ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৬ মে ২০২৫
দৈনিক গণবার্তা | Gano Barta