গণবার্তা রিপোর্টার : স্পুটনিক ট্রাম্প লেখেন, ‘আমি দু’টি নিউক্লিয়ার সাবমেরিন এমন অঞ্চলে মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছি, যেখানে প্রয়োজনে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানানো সম্ভব হবে। আশা করি এই বোকামিপূর্ণ ও উস্কানিমূলক মন্তব্যগুলোর পরিণতি আরো বেশি কিছু হবে না।‘
রাশিয়ার সঙ্গে উত্তেজনাপূর্ণ বাকযুদ্ধে জড়ানোর মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দু’টি নিউক্লিয়ার সাবমেরিনের অবস্থান পরিবর্তনের নির্দেশ দিয়েছেন। শুক্রবার ট্রুথ সোশ্যাল-এ এক পোস্টে ট্রাম্প জানান, সাবমেরিন মোতায়েনের এই সিদ্ধান্ত এসেছে রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমানে দেশটির সিকিউরিটি কাউন্সিলের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভের ‘উসকানিমূলক ও বেপরোয়া বক্তব্যের’ প্রতিক্রিয়ায়। খবর রয়টার্স।মেদভেদেভ সম্প্রতি এক বক্তব্যে হুঁশিয়ারি দেন, ট্রাম্পের উচিত ‘ডেড হ্যান্ড’ কতটা বিপজ্জনক তা ভুলে না যাওয়া। মূলত এটি রাশিয়ার স্নায়ুযুদ্ধকালীন স্বয়ংক্রিয় নিউক্লিয়ার প্রতিশোধ ব্যবস্থা।
জবাবে ট্রাম্প লেখেন, ‘আমি দু’টি নিউক্লিয়ার সাবমেরিন এমন অঞ্চলে মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছি, যেখানে প্রয়োজনে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানানো সম্ভব হবে। আশা করি এই বোকামিপূর্ণ ও উস্কানিমূলক মন্তব্যগুলোর পরিণতি আরো বেশি কিছু হবে না।‘ তিনি আরো বলেন, ‘কথারও গুরুত্ব আছে, কারণ এগুলো অনেক সময় অনিচ্ছাকৃত বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।‘
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ট্রাম্প ও মেদভেদেভের মধ্যে সম্পর্কে দেখা দিয়েছে আরো টানাপড়েন। মেদভেদেভ বর্তমানে রাশিয়ার দেশটির সিকিউরিটি কাউন্সিলের ডেপুটি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত। ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন মেদভেদেভ। তখন পুতিন ছিলেন তার প্রধানমন্ত্রী। পরে তারা পদবিনিময় করেন—পুতিন প্রেসিডেন্ট হন এবং মেদভেদেভ হন প্রধানমন্ত্রী (২০১২–২০২০)।
রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের কারণে ট্রাম্পের ক্ষোভ বাড়ছে, এবং তিনি মেদভেদেভকে সরাসরি লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছেন। উভয় নেতাই নিউক্লিয়ার অস্ত্র নিয়ে খোলামেলা ইঙ্গিত দিচ্ছেন, যা উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।এই সপ্তাহের শুরুতে ট্রাম্প এক পোস্টে মেদভেদেভের হুমকিকে ‘বাজে বুলি’ আখ্যা দিয়ে লেখেন, ‘ভারত রাশিয়ার সঙ্গে কী করে, তাতে আমার কিছু যায় আসে না। তারা চাইলে একসঙ্গে তাদের মরা অর্থনীতি নিয়ে তলিয়ে যাক। তিনি আরো বলেন, ‘রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে প্রায় কোনো ব্যবসাই নেই, আর সেটাই থাকুক। মেদভেদেভ একজন ব্যর্থ প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট। এখনো নিজেকে প্রেসিডেন্ট ভাবেন। তাকে বলুন, তার শব্দ বাছাই করতে। সে খুব বিপজ্জনক জায়গায় পা রাখছে।‘
মেদভেদেভ তার প্রতিক্রিয়ায় লিখেছেন, ‘যদি রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্টের কিছু কথা আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে এতটা আতঙ্কিত করে, তাহলে বুঝে নিতে হবে, রাশিয়া সঠিক পথে আছে।‘ তিনি আরো ব্যঙ্গ করে ‘দ্য ওয়াকিং ডেড’ সিরিজের উল্লেখ করেন। তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, রাশিয়া কতটা ধ্বংস সাধনের ক্ষমতা রাখে।তিনি বলেন, ‘ট্রাম্প যদি ভারতের ও রাশিয়ার মরা অর্থনীতি নিয়ে এত কথা বলেন, তাহলে তার প্রিয় ওয়াকিং ডেড সিনেমাগুলোর কথা মনে করিয়ে দিই।‘
এটাই প্রথম নয়, জুন মাসের শেষেও অনলাইনে ট্রাম্প-মেদভেদেভ পরমাণু অস্ত্র নিয়ে তীব্র লড়াই চালান। তখন ট্রাম্প লেখেন, ‘মেদভেদেভ কি নকলভাবে ‘এন’ শব্দ (নিউক্লিয়ার) উচ্চারণ করছেন? আর বলছেন রাশিয়া ও অন্যান্য দেশ ইরানকে নিউক্লিয়ার অস্ত্র দেবে? তিনি আরো বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ইরানে সাম্প্রতিক আঘাত ছিল শুধুই ঝলক। আমাদের সবচেয়ে আধুনিক ও শক্তিশালী অস্ত্র হলো নিউক্লিয়ার সাবমেরিন। এগুলো ২০ বছর এগিয়ে এবং সবচেয়ে প্রাণঘাতী। শেষে মেদভেদেভের অবস্থান নিয়ে তাকে খোঁচা দিয়ে বলেন, ‘ একারণেই হয়তো পুতিনই বস!’
Posted ১০:২৩ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ০২ আগস্ট ২০২৫
দৈনিক গণবার্তা | Gano Barta