স্টাফ রিপোর্টার : রাষ্ট্রের প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে আমলাশাসন চলার ফলে অনেক কিছুই বাধাগ্রস্ত হচ্ছে— এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমলাদের অগ্রাধিকারে রয়েছে তাদের নিজেদের সুযোগ-সুবিধা। তাদের সব চাহিদাই শতভাগ পূরণ হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে—আমলারা তো রাষ্ট্রের সার্বিক কর্তৃত্বের জায়গায় নেই। তারা নিজেদের একটি শক্ত অবস্থান তৈরি করে নিয়েছেন, কিন্তু তাদের এ সুযোগ করে দেয়া হয়েছে কেন?’
আমলাতান্ত্রিকতার কারণে পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা অনেক জায়গায় ব্যাহত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান। অন্তর্বর্তী সরকারের নিয়োগ সংস্কৃতি নিয়ে বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘অবসরপ্রাপ্ত আমলাদের নিয়ে আসা হয়েছে—উনারা এসেছেন কার মাধ্যমে? বিষয়টি তো অন্তর্বর্তী সরকারের ওপরই বর্তায়। তাদের নিয়োগকর্তা অন্তর্বর্তী সরকার। ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আমলাতান্ত্রিকতার কারণে কাঙ্ক্ষিত অনেক অগ্রগতি হচ্ছে না। তার একটি বড় কারণ হচ্ছে যারা সুযোগসন্ধানী এবং সুবিধাসন্ধানী আমলা, তাদের অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায়িত করেছে। একই সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের ‘গভর্নিং স্টাইল’-এর মধ্যেও সমস্যা তৈরি হয়েছে। কারণ ভালো কিছু করতে চাওয়া আমলারা বুঝে উঠতে পারছেন না যে তারা কোন সিগন্যাল মানবেন। একদিকে সরকার আমলাদের অতি ক্ষমতায়ন করেছে, অন্যদিকে তাদের প্রশাসনিক বার্তায় যাচ্ছে অস্পষ্টতা ও অস্বচ্ছতা। রাষ্ট্রের প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে আমলাশাসন চলার ফলে অনেক কিছুই বাধাগ্রস্ত হচ্ছে— এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমলাদের অগ্রাধিকারে রয়েছে তাদের নিজেদের সুযোগ-সুবিধা। তাদের সব চাহিদাই শতভাগ পূরণ হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে—আমলারা তো রাষ্ট্রের সার্বিক কর্তৃত্বের জায়গায় নেই। তারা নিজেদের একটি শক্ত অবস্থান তৈরি করে নিয়েছেন, কিন্তু তাদের এ সুযোগ করে দেয়া হয়েছে কেন প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোয় সুযোগসন্ধানী আমলাদের নেতৃত্ব নিয়ে ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ‘তারা মুখে অনেক বিপ্লবী উচ্চাকাঙ্ক্ষার কথা বলেন এবং জনচাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে সংস্কারের নানা প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু বাস্তবায়নের মাধ্যম হিসেবে তারা বেছে নিয়েছেন গতানুগতিক আমলাদের। আমলাদের মধ্যে ভালো কর্মকর্তা নেই—তা নয়। অনেক দক্ষ, উদ্যমী তরুণ কর্মকর্তা আছেন, যারা দেশের জন্য আন্তরিকভাবে কাজ করতে চান। কিন্তু সুযোগসন্ধানী আমলা নেতৃত্বের কারণে আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোয় একটি গভীর সমস্যা তৈরি হয়েছে। সেই জায়গায় প্রশ্রয় দেয়া হয়েছে এবং এর বিস্তার ঘটেছে—যার দায় অনেকটাই অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর বর্তায়। ড. হোসেন জিল্লুর রহমান তার মূল্যায়নে আরো বলেন, ‘আবার দেখা যাচ্ছে, জুলাই অভ্যুত্থানের অতিমাত্রায় সুবিধাভোগী কিছু গোষ্ঠী আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে নিজেদের স্বার্থে চূড়ান্তভাবে অপব্যবহার করেছে। এ সুবিধাসন্ধানী আমলারা ক্ষমতা পেয়ে কেবল নিজেদের সুবিধাই বাড়িয়েছেন, আর যারা সত্যিকার অর্থে সৎভাবে রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম এগিয়ে নিতে চান, তারা পাচ্ছেন ভুল ও বিভ্রান্তিকর সিগন্যাল।
Posted ১১:১১ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫
দৈনিক গণবার্তা | Gano Barta