আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে টানা তৃতীয় মেয়াদে শপথ নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। গতকাল রোববার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে নয়াদিল্লিতে রাষ্ট্রপতি ভবনের আঙিনায় এই শপথ গ্রহণ হয়। নরেন্দ্র মোদিকে শপথ পড়ান ভারতের রাষ্ট্রপতি দৌপদী মুর্মু।
অনুষ্ঠানে দেশ-বিদেশের প্রায় আট হাজার বিশিষ্টজনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। অতিথিদের মধ্যে বেশ কয়েকটি দেশের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। জমকালো এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান উপলক্ষে নয়াদিল্লির নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়। এ অনুষ্ঠানকে ঘিরে গণমাধ্যমগুলো সরগরম, চলছে নতুন সরকারÑকেমন হবে তা নিয়ে আলোচনা। নরেন্দ্র মোদির শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গত শনিবার নয়াদিল্লি পৌঁছান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ছাড়া প্রতিবেশী দেশ ও ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আরও কয়েকটি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। তাদের মধ্যে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জু, সিশেলসের ভাইস প্রেসিডেন্ট আহমেদ আফিফ, মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী প্রবীন্দ কুমার জগন্নাথ, নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দহল প্রচন্ড, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং টোগবে অন্যতম।
জওহরলাল নেহরুর পর প্রথম নেতা হিসেবে তৃতীয়বারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী হলেন নরেন্দ্র মোদি। দুই সরকারের পূর্ণ মেয়াদে দায়িত্ব পালনের পর তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ও কংগ্রেসের নেতা জওহরলাল নেহরুর রেকর্ড স্পর্শ করলেন নরেন্দ্র মোদি।
ভারতের ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতি ও ‘সাগর’ ভিশনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির টানা তৃতীয়বারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রতিবেশী দেশগুলোর নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয় বলে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। সাগর ভিশন বা ‘সিকিউরিটি অ্যান্ড গ্রোথ ফর অল ইন দ্য রিজন’ হলো ভারত মহাসাগরের দেশগুলোর সঙ্গে ভূরাজনৈতিক সম্পর্ক রক্ষার মোদি সরকারের একটি নীতি।
২০১৪ ও ২০১৯ সালে নরেন্দ্র মোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যথাক্রমে দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) এবং বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশনের (বিমসটেক) দেশগুলোর নেতারা অংশ নিয়েছিলেন। কোন মন্ত্রণালয় কে পাবে, তা বিজেপি ও তাদের জোট ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের (এনডিএ) শরিক দলগুলোর নেতাদের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠকের পর এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হয়। বিজেপি নেতা অমিত শাহ, রাজনাথ সিং ও বিজেপির সভাপতি জেপি নাড্ডাসহ দলটির অন্য জ্যেষ্ঠ নেতারা এনডিএর শরিক চন্দ্রবাবু নাইডুর দল তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি) ও নীতীশ কুমারের জনতা দল-ইউনাইটেড (জেডি-ইউ) ও একনাথ শিন্ডের শিবসেনার নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন। পিটিআইয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, টিডিপির রাম মোহন নাইডু, জেডি-ইউর লালন সিং, সঞ্জয় ঝা ও রামনাথ ঠাকুর এবং লোক জনশক্তি পার্টির (রাম বিলাস) চিরাগ পাসওয়ান মন্ত্রিসভায় পদ পেতে যাচ্ছেন ওদিকে, মোদির এবারের জোট সরকার টিকবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন বিরোধীদের ‘ইন্ডিয়া’ জোটের নেতারা। ইন্ডিয়া জোট এবারের লোকসভায় ২৩৩ আসন পেয়েছে। তারা সরকার গঠনের জন্য চন্দ্রবাবু নাইডু ও নীতীশ কুমারের সঙ্গে গোপনে প্রস্তাব পাঠিয়েছিল বলে আলোচনা রয়েছে। প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস বিজেপিকে উপযুক্ত সময়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
Posted ৪:৩১ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ১০ জুন ২০২৪
দৈনিক গণবার্তা | Gano Barta