![](https://ganobarta.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
লিটন কুমার রায়, ব্যুরোচীফ:
খুলনার রূপসা উপজেলার নৈহাটি ইউনিয়নের জাবুসা ০৩ নং ওয়ার্ড আ’লীগের সভাপতি ও বর্তমান ইউপি সদস্য বাবর আলীর চাঁদাবাজী, হুমকি ও অশ্লীল গালিগালাজ করার দুটি চাঞ্চল্যকর অডিও রেকর্ড সদ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে রীতিমতো ভাইরাল হয়েছে। অডিও ক্লিপ দুটি বেশ কয়েক মাস আগে করা হয়েছিল বলে জানা যায়। অনলাইনে ফাঁস হওয়া কল রেকর্ডের প্রথম ব্যক্তির নাম ছিল হাফিজুর সরদার, পেশায় তিনি দিনমজুর (শ্রমিক)। অত্র অঞ্চলের গ্লোরী জুট মিলে মেম্বার বাবর আলী ও হাফিজুর সরদার একত্রে কাজ করার সুবাধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে হাফিজুর সরদার এর কাছে প্রায় চাঁদা দাবি করতেন মেম্বার বাবর আলী। এক পর্যায়ে তাদের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে হাফিজুর সরদার বাবর আলীর চাঁদাবাজি কথা রেকর্ড করেন। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পর বর্তমানে ফাঁস হওয়া কল রেকর্ড শুনে এলাকাবাসীর মনে তীব্র ঘৃনা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আরো জানা যায়, মেম্বার বাবরের চাহিদা মতো চাঁদা না দিতে পারায় হাফিজুর সরদারের কাজটি চলে যায়। ফলে তাকে অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করতে হয়। ফাঁস হওয়া প্রথম কল রেকর্ড- এ ইউপি সদস্য বাবর আলীর বক্তব্যে শোনা যায়, হাফিজুর মিল থেকে চলে যেতে হবে আর তা না হলে প্রতি সপ্তাহে (১০) দশ হাজার টাকা দিবি আর তা না হলে ঠ্যাংয়ের নিচে থেকে ভেঙে ফেলাবো বাড়োয়ে, একদম পরিষ্কার কথা শুনতে পাইছিস। দ্বিতীয় কল রেকর্ড-এ স্থানীয় দিনমজুর নাছিম নামের ব্যক্তিকে অকথ্যভাষায় গালিগালাজ করা হয় যেখানে তার মা বাপ তুলে তোর মায়ের….ভেতর, গাংকুল থেকে তোকে তাড়ায় দিবো, শোয়ারের বাচ্চা, খানকির ছেলে, বিকেলে দেখা করবি তোর চামড়া তুলে ফেলবো, ইত্যাদি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে শোনা যায়। ফাঁস হওয়া কল রেকর্ড নিয়ে দলীয় পর্যায়ের নেতারাও চরম ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছেন। এলাকার সকলেই বলছেন এমন মেম্বার আমরা আর আমাদের সেবক হিসেবে চাই না। তিনি দেশের স্বনামধন্য প্রভাবশালী আ’লীগ নেতা খুলনা-০৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শেদীসহ স্বচ্ছ রাজনীতিবিদদের সাথে সেলফি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে নিজেকে মস্তবড় এক আ’লীগ নেতা হিসেবে পরিচিতি বাড়ান, কাউকে তোয়াক্কা না করে ইচ্ছে মতো বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত থাকেন। কাউকে পরোয়া না করা মেম্বার বাবর আলী আসলেই একজন অশিক্ষিত, নিজের নাম একবার সাক্ষর করতে কমপক্ষে তিন বার কলম ভাঙেন। এক সময়ের জাতীয় পার্টির ছত্রছায়ায় থাকা মোটর সাইকেল গ্যারেজ মিস্ত্রী থেকে এখন সরকারী অর্থ আত্মসাৎ, সরকারি গাছ কর্তন, সাংবাদিক হত্যা চেষ্টা, কিশোরগ্যাং, ভূমিদস্যু সহ একাধিক অপরাধে জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। তিনি অবৈধ পন্থায় অবৈধ অর্থ উপার্জনের মধ্যে দিয়ে রাতারাতি কোটিপতি বনে গেছেন। অসহায় মানুষের সরকারী অনুদান না দিয়ে নিজের পরিচিত সাবলম্বী লোকদের মধ্যে সরকারি অনুদান বন্টন করে আসছেন বলেও জানা যায়। তার বাহিনীর মধ্যে রয়েছে শীর্ষ সন্ত্রাসী রনি, মাদক ব্যবসায়ী ফয়সাল, চাঁদাবাজ ও সোর্স মানিক, মাদকসেবী রিমন সহ আরো অনেকে। তাছাড়া এলাকায় তার আপন আরো দুই ভাই ১) মোঃ জাকির হোসেন (৫২) ও ২) মোঃ হুমায়ুন কবির (৪৫) খুলনায় শেখ পরিবারের নাম ব্যবহার করে মানুষের সাথে দীর্ঘদিন ধরে অসদাচরণ করে আসছেন। অসহায় নারীদের কুপ্রস্তাব সহ যেখানে চাকরি করেন সেখানে অন্যান্য স্টাফদের সাথে খারাপ আচারণ করার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এলাকায় তারা প্রায় শ্লোগান দিয়ে থাকেন-আমরা যতই অপরাধ করি আমাদের কেউ কিছু ছিড়তে পারবে না। তাদের তিন ভাইয়ের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হওয়া মানুষ গুলো এই সন্ত্রাসীদের থেকে রেহাই পেতে শেখ পরিবার সহ প্রশাসনের কাছে আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। এলাকাবাসী আরও জানান, এতদিন আমরা তাদের সকল অত্যাচার নিরবে সহ্য করেছি এখন আর সহ্য করতে চাই না। তার চাঁদাবাজ সন্তান শাহারিয়ার বাঁধনের চাঁদাবাজি সহ ইতিমধ্যে মেম্বার বাবরকে অপসারণ সহ দলীয় পদ বাতিলের জন্য স্থানীয় উদ্ধর্তন প্রশাসন ও দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে অনেকেই কথা বলতে শুরু করেছে বলে জানা গেছে। উক্ত বিষয়ে ইউপি সদস্য বাবর আলীর মুঠোফোনে বার বার কল করা হলেও ফোনটি রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। এমন চাঞ্চল্যকর কল রেকর্ড ফাঁস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া বিষয়ে রূপসা থানার নির্বাহী অফিসার কোহিনুর জাহান মুঠোফোনে বলেন, তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। খুলনা জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডঃ সুজিত অধিকারীর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, যদি তার ব্যক্তিগত চরিত্রের কারণে বাংলাদেশ আওয়ামী সংগঠনের বিন্দুমাত্র ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এবং সেটা প্রমানিত হয় তবে সংগঠনের পক্ষ থেকে নিশ্চয়ই তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।