মোঃ নয়ন শেখ কুমারখালী (কুষ্টিয়া):
কুমারখালী উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের ৯০ নম্বর ওয়াশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘেঁষে বিশাল এক দিঘি। নিয়মিত পাড় ভাঙায় প্রতিবছর বাড়ছে দিঘির আয়তন। এতে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে বিদ্যালয়টি। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিয়ে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছেন শিক্ষকরা।
স্থানীয়দের ভাষ্য, সাত বিঘা জমিতে দিঘিটি অবস্থিত। প্রায় ৩০ বছর ধরে পাড় ভাঙায় দিঘিটি আরও বড় আকার ধারণ করেছে। এতে ঝুঁকির মুখে রয়েছে ওয়াশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। ভাঙন রোধে একাধিকবার আবেদন করা সত্ত্বেও কোনো ব্যবস্থা নেননি উপজেলা প্রশাসন ও শিক্ষা কর্মকর্তারা। বিদ্যালয়টি ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬৮ সালে প্রায় ৫২ শতাংশ জমিতে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এখানে বতর্মানে শিক্ষক চারজন; ২০৬ জন শিক্ষার্থী। ভাঙনের কারণে এরই মধ্যে বিদ্যালয়ের প্রায় দুই- তৃতীয়াংশ জায়গা দিঘিতে বিলীন হয়েছে। বর্তমানে দিঘি ও বিদ্যালয় ভবনের মধ্যে মাত্র কয়েক হাত ব্যবধান। এতে ঝুঁকি নিয়েই শিশুদের খেলাধুলা ও বিদ্যালয়ে পাঠদান চলছে।
বৃহস্পতিবার সরেজমিন ওয়াশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের মূল খেলার মাঠ দিঘিতে বিলীন হয়েছে। মাত্র কয়েক হাত খোলা জায়গায় শিক্ষার্থীরা খেলা করছে। বিদ্যালয় ভবনের পশ্চিম-উত্তরাংশের খুব কাছাকাছি রয়েছে দিঘি। শিক্ষার্থী কেউ কেউ দিঘি থেকে কচুরিপানা তুলছে। আলাপকালে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী আরিয়ান বলে, খেলার মাঠ খুব ছোট। খেলার সময় বল বারবার পুকুরে চলে যাওয়ায় তা আনতে পানিতে নামতে হয়। রনক নামে আরেক শিক্ষার্থী জানায়, বিদ্যালয়ের খুব কাছেই পুকুর। সব সময় ভয় করে। সহকারী শিক্ষক ইসমত আরা খাতুন বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিয়ে তিনি সব সময় আতঙ্কে থাকেন। অভিভাবকরাও দুশ্চিন্তা করেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিলনুর রহমান বলেন, বারবার ইউএনও এবং শিক্ষা অফিসে জানিয়েও দিঘির ভাঙন রোধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি। দিঘির মালিকরাও ব্যবস্থা নেয় না। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় থাকতে হয়।
দিঘির ২৭ শতাংশ জমির মালিক ও বর্তমান ইজারাদার আব্দুল হাইয়ের ভাষ্য, ওয়ারিশসূত্রে বর্তমানে দিঘির মালিক পাঁচ শতাধিক মানুষ। পাড় বাঁধার জন্য একবার দিঘির পানি সেচে ফেলা হয়। কিন্তু বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দিঘির পাড় বাঁধেনি। তাদের পক্ষে দিঘির পাড় বাঁধা সম্ভব নয়। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বরাদ্দ না থাকায় ওই বিদ্যালয়ের দিঘির পাড় বাঁধা সম্ভব হয়নি। ইউএনও মাহবুবুল হক জানান, তিনি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে দ্রুতই এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেবেন।