স্টাফ রিপোর্টার: বায়ু দূষণ, তাপপ্রবাহ ও বনাঞ্চল কমে যাওয়ায় দেশে বজ্রপাতের প্রবণতা বাড়ছে। রোববার (৫ অক্টোবর) প্রাকৃতিক এ দুর্যোগে পাঁচ জেলায় প্রাণ হারিয়েছেন আটজন। এর মধ্যে কুমিল্লায় তিনজন ও ঝিনাইদহে দুজন মারা গেছেন। বাকি তিনজন গাইবান্ধা, বগুড়া ও নারায়ণগঞ্জে মারা গেছেন। এর আগে ১ অক্টোবর কুড়িগ্রাম, রংপুর, যশোর, রাজশাহী, নোয়াখালী ও গোপালগঞ্জে আটজনের মৃত্যু হয়। বায়ু দূষণ, তাপপ্রবাহ ও বনাঞ্চল কমে যাওয়ায় দেশে বজ্রপাতের প্রবণতা বাড়ছে। রোববার (৫ অক্টোবর) প্রাকৃতিক এ দুর্যোগে পাঁচ জেলায় প্রাণ হারিয়েছেন আটজন। এর মধ্যে কুমিল্লায় তিনজন ও ঝিনাইদহে দুজন মারা গেছেন। বাকি তিনজন গাইবান্ধা, বগুড়া ও নারায়ণগঞ্জে মারা গেছেন। এর আগে ১ অক্টোবর কুড়িগ্রাম, রংপুর, যশোর, রাজশাহী, নোয়াখালী ও গোপালগঞ্জে আটজনের মৃত্যু হয়। বিস্তারিত প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে- কুমিল্লা: হোমনা উপজেলায় বজ্রপাতে দুই নারীসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। বেলা ৩টার দিকে উপজেলার ঘাগুটিয়া ইউনিয়নের ভবানীপুর খেয়াঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তারা সবাই খেয়াপারের জন্য ঘাটে অপেক্ষমাণ ছিলেন। মৃতরা হলেন উপজেলার নালা দক্ষিণ মধ্যবিত্ত পাড়া গ্রামের মৃত হাজী মতিউর রহমানের মেয়ে মমতাজ বেগম (৩৭) ও জাকিয়া (২৩)। অপরজন খোদে দাউদ গ্রামের রাহিনুর ইসলামের ছেলে রাশেদ মিয়া (২৩)। হোমনা থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘দুপুরে ভারী বৃষ্টি শুরু হলে ভবানীপুর ঘাটে উজানচর-ঘাগুটিয়া খেয়া পারাপারের জন্য কয়েকজন অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয়। ঝিনাইদহ: সকালে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার আড়মুখী গ্রামের কৃষক শিমুল বিশ্বাস বাড়ির পাশে নিজ জমিতে কাজ করছিলেন। একপর্যায়ে বৃষ্টি শুরু হলে অন্যদের সঙ্গে মাঠ থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান শিমুল বিশ্বাস। অন্যদিকে একই সময় শৈলকুপা উপজেলার শেখরা গ্রামের কৃষক হুরমত শেখ বাড়ির পাশে মাঠে কাজ করছিলেন। বৃষ্টি ও বজ্রপাত শুরু হলে তিনিও বাড়ি ফিরছিলেন। পথে বজ্রপাতে গুরুতর আহত হন তিনি। পরিবারের লোকজন তাকে বাড়ি নিয়ে গেলে মারা যান হুরমত শেখ। ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান জাকারিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে প্রায় সময় বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। বৃষ্টি বা বজ্রপাতের সময় কেউ খোলা আকাশের নিচে না থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। গাইবান্ধা: সাঘাটায় বজ্রপাতে আব্দুল আজিজ (৪৫) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাড়ির পাশে জমিতে কাজ করছিলেন। হঠাৎ আকাশে মেঘ জমে বৃষ্টি শুরু হয়। এ সময় বজ্রপাতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। আব্দুল আজিজ দীঘলকান্দী গ্রামের মকবুল হোসেন ছেলে।
সাঘাটা থানার ওসি বাদশা আলম জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে।বগুড়া: জেলার গাবতলীতে বজ্রপাতে শেফালি বেগম (৫৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। দুপুরে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে শেফালি বেগম বাড়ির পাশে ইছামতী নদীর তীরে গরুর জন্য ঘাস কাটতে যান। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাত হলে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। শেফালী নাড়ুয়ামালা ইউনিয়নের মধ্যমারছেও গ্রামের দেলোয়ার প্রামাণিকের স্ত্রী।নারায়ণগঞ্জ: আড়াইহাজারে কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের উলুকান্দি গ্রামে বজ্রপাতে ওয়াসিম (১৩) নামে এক স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। বিকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ওয়াসিম উলুকান্দি গ্রামের দিলা মিয়ার ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন আড়াইহাজার থানার (ওসি তদন্ত) সাইফুদ্দিন। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থান বজ্রপাতের জন্য সহায়ক। মূলত মে মাসে সবচেয়ে বেশি; ২৬ শতাংশ বজ্রপাত হয়। মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে প্রায় ৫৯ শতাংশ এবং জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৩৬ শতাংশ বজ্রপাত হয়। সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সময় এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত। বজ্রপাত প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। এ অবস্থায় কী করা যাবে আর যাবে না তা গুরুত্বপূর্ণ। মাঠে-ঘাটে, নদীতে-পানিতে, বাইরে যারা কাজ করেন, বিশেষ করে যারা গ্রামে কৃষিকাজ করেন, তারা বজ্রপাতে আক্রান্ত হতে পারেন। তাই নিরাপদ স্থানে অবস্থান করতে হবে। মাটির সঙ্গে যেন স্পর্শ কম হয়, এমনভাবে বসে থাকা। দুই হাত দিয়ে কান চেপে ধরতে হবে। তবে গাছের নিচে দাঁড়ানো ঠিক হবে না। ঘরের ভেতরে অবস্থান করলে, দরজা-জানালার পাশে না দাঁড়ানো ভালো। যদি কেউ পানিতে থাকে, তাকে অবশ্যই তাড়াতাড়ি পানি থেকে উঠে আসতে হবে।
Posted ৯:১২ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৫
দৈনিক গণবার্তা | Gano Barta