স্টাফ রিপোর্টার : যুদ্ধবিরতির ৬০ দিনের মধ্যে উপকূলবর্তী আল-মাওয়াসি এলাকা থেকে এসব মানুষকে রাফাহে সরিয়ে নেওয়া হবে। সেখানে গঠিত হবে ‘মানবিক শহর’। তবে এই পরিকল্পনা ইসরায়েলি সেনাবাহিনী নয়, এটি পরিচালনা করবে ইসরায়েল-আমেরিকা সমর্থিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’। গাজার দক্ষিণের রাফাহ গভর্নরেট এলাকায় ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়েছে ইসরায়েল। আল জাজিরার অনুসন্ধান ইউনিট সানাদের স্যাটেলাইট বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০২৫ সালের ৪ জুলাই পর্যন্ত রাফাহে প্রায় ২৮,৬০০টি ভবন ধ্বংস করা হয়েছে। অথচ এপ্রিলের শুরুতে সংখ্যাটি ছিল ১৫,৮০০। অর্থাৎ মাত্র তিন মাসে ধ্বংস করা হয়েছে ১২,৮০০টি ভবন। এই ধ্বংসযজ্ঞের সঙ্গে মিলে গেছে মার্চের শেষ দিকে ইসরায়েলের নতুন রাফাহ অভিযান। এরই মধ্যে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে, যার আওতায় ৬ লাখ মানুষকে রাফাহে সরিয়ে নেয়া হবে। রাফাহেই তৈরি করা হবে তথাকথিত একটি ‘হিউম্যানিটারিয়ান সিটি’, যেটি পর্যায়ক্রমে গোটা গাজার ২০ লাখ মানুষের জন্য আশ্রয়স্থল হবে।ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ জানান, যুদ্ধবিরতির ৬০ দিনের মধ্যে উপকূলবর্তী আল-মাওয়াসি এলাকা থেকে এসব মানুষকে রাফাহে সরিয়ে নেয়া হবে। সেখানে গঠিত হবে ‘মানবিক শহর’। তবে এই পরিকল্পনা ইসরায়েলি সেনাবাহিনী নয়, এটি পরিচালনা করবে ইসরায়েল-আমেরিকা সমর্থিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’।ইসরায়েলি রাজনৈতিক বিশ্লেষক ওরি গোল্ডবার্গ বলেন, এই পরিকল্পনা ‘সবদিক থেকেই একটি ঘেরা বন্দিশিবির’ তৈরির প্রয়াস। তার মতে, ‘এটি একটি স্পষ্ট মানবতাবিরোধী অপরাধ।’ একই অভিমত ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্টের। এই পরিকল্পনার নিন্দা জানিয়ে তিনি কঠোর ভাষায় বলেছেন, গাজার রাফাহ শহরের ধ্বংসস্তূপের ওপর ‘মানবিক শহর’ গড়ে তোলার পরিকল্পনা আসলে ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি ‘কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প’ এবং এটি বাস্তবায়িত হলে তা হবে ‘জাতিগত নির্মূল’। ইসরায়েলের এ পরিকল্পনার নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার প্রধান ফিলিপ লাজারনিও।
সানাদের স্যাটেলাইট বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ইসরায়েল দুই ধাপে রাফায় অভিযান চালিয়েছে। প্রথম ধাপে, ২০২৪ সালের মে মাসে পূর্ব ও পশ্চিম রাফাহের বড় একটি অংশে সামরিক অভিযান চালিয়ে ব্যাপক ভবন ধ্বংস করে। দ্বিতীয় ধাপে, ২০২৫ সালের এপ্রিল থেকে শুরু করে অবশিষ্ট আবাসিক ভবনগুলো ধ্বংস করা হয়। এই ধাপে জমি সমান করা এবং মানবিক সহায়তা কেন্দ্রে যাতায়াতের জন্য রাস্তা নির্মাণের কাজও চালানো হয়েছে।ব্রিটিশ-ইসরায়েলি বিশ্লেষক ড্যানিয়েল লেভি বলেন, ‘ইসরায়েল রাফাহকে ব্যবহার করতে চায় যতটা সম্ভব ফিলিস্তিনিকে ভূখণ্ড থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য।’ তার মতে, ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’-এর একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণে মানবিক সহায়তা বিতরণও এই পরিকল্পনারই একটি অংশ। যার মাধ্যমে একটি নতুন সামাজিক প্রকৌশল চালানো হচ্ছে।ইসরায়েলি পত্রিকা হারেৎজের কলাম লেখক গিডিওন লেভি বলেন, ‘এই পরিকল্পনার শেষ লক্ষ্য হলো জাতিগত নির্মূল।
Posted ৩:৫৯ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫
দৈনিক গণবার্তা | Gano Barta