আজ, বৃহস্পতিবার


২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
শিরোনাম

ভুমি জরিপ ও চুক্তি সম্পাদন হলেও অগ্রগতি নেই অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের কাজের

সোমবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩
ভুমি জরিপ ও চুক্তি সম্পাদন হলেও অগ্রগতি নেই অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের কাজের
সংবাদটি শেয়ার করুন....
বিমল কুমার রায়, দেবীগঞ্জ (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি :
পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলায় অর্থনৈতিক অঞ্চল করার জন্য ভুমি জরিপ  হলেও আটকে আছে বাস্তবায়নের কাজ।
২০২০ সালের ২৪ শে আগষ্ট পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ ইকোনমিক জোন অথরিটি(বেজা)-র  সাথে চুক্তি স্বাক্ষর ও দলিল সম্পাদন হলেও তিন বছরেও দেখা মিলছে না কোন অগ্রগতি।
উল্লেখ্য যে, উক্ত দলিলে সরকারের পক্ষে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন এবং বাংলাদেশ ইকোনমিক যোন অথরিটি (বেজা)-র পক্ষে স্বাক্ষর করেন।
উপজেলার দেবীগঞ্জ সদর, দেবীডুবা, এবং সোনাহার ইউনিয়নের প্রায় ৬০২ দশমিক ৪২ একর জমির ওপর ৩ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এই অর্থনৈতিক অঞ্চল হওয়ার কথা ছিল। এমনকি সেই লক্ষ্যে  জমি নির্বাচন করাও হয়। নির্বাচিত জমির  মধ্যে খাস  জমি ছিল ২১৭ একর এবং বাকি জমি অধিগ্রহণের কথা ছিল। চুক্তি স্বাক্ষরের ৩ বছর পেরিয়ে গেলেও অর্থনৈতিক অঞ্চল বাস্তবায়নের দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি হয়নি। জমি জরিপে কিছুটা কাজ এগিয়ে নিয়েছে বেজা কর্তৃপক্ষ। তবে প্রস্তাবিত জমি পূর্বের আয়তন থেকে কমিয়ে ২৫০ দশমিক ৮৫ করা হয়, যার খাস জমি ২১৭ একর।
যেখানে ২৪০ একর জমিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং ১০ দশমিক ৮৫ একর জমিতে সংযোগ সড়ক নির্মান করা হবে। ইতোমধ্যে বেজার অনুকূলে ১৮৫ দশমিক ৮৬ একর জমি বন্দোবস্ত প্রদান করেছে ভূমি দপ্তর। অবশিষ্ট ব্যাক্তি মালিকানাধীন ১৯ দশমিক ৩০ একর এবং ভূমিহীনদের নিকট বন্দোবস্তকৃত ৪৫ দশমিক ৬১ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে। সর্বশেষ গত ১৭ ফেব্রুয়ারী বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন এই অর্থনৈতিক অঞ্চলের জায়গা পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে  সাথে ছিলেন দেবীগঞ্জের তৎকালীন এসিল্যান্ড গোলাম রব্বানী সরদার।
পরবর্তীতে গত ৮ মে,২০২৩ ইং তারিখে তিনি (এসিল্যান্ড) প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চলের জমি সরেজমিনে পরিদর্শন করে জমি বন্দোবস্ত ও অধিগ্রহণের বিস্তারিত তথ্য সম্বলিত রিপোর্ট দাখিল করেন।
তবে অসমর্থিত সূত্রে জানা গেছে, জমি অধিগ্রহণে প্রয়োজনীয় অর্থের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রস্তাবিত জমির আয়তন কমানো হয়েছে।
দেবীগঞ্জে অর্থনেতিক অঞ্চল বাস্তবায়নের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে বেজার নির্বাহী পরিচালক শেখ ইউসুফ হারুন মুঠোফোনে বলেন, এখনো আমরা এই বিষয়ে পজিটিভ আছি। ফিজিবিলিটি স্টাডি (সম্ভাব্যতা যাচাই) হয়ে গেলেই আমরা পরবর্তী কাজ শুরু করতে পারবো।
এ বিষয়ে দেবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক চিশতি বলেন,  এই এলাকাটি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন এবং  বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত হবে । ভৌগোলিক কারনে সারাদেশের সাথে পঞ্চগড় তথা দেবীগঞ্জের নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। এখানকার বালু, পাথর, কৃষিজ পন্য প্রতিদিন রাজধানীসহ সারাদেশে সরবরাহ হয়। সারাদেশের সাথে যোগাযোগের জন্য প্রশস্ত সড়ক পথ, দ্রুত যাতায়াতের জন্য নিকটবর্তী সৈয়দপুর বিমানবন্দর ও রেলপথের সুবিধা পাবেন বিনিয়োগকারীরা। সীমান্তবর্তী জেলা হবার কারনে বাংলাবান্ধা ও চিলাহাটি স্থলবন্দর দিয়ে সহজেই আমদানি-রপ্তানির সুযোগ রয়েছে।
তবে সরেজমিনে গিয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে কিছুটা জটিলতাও লক্ষ্য করা গেছে। প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চলের মাঝে রয়েছে দাড়ার হাট আবাসন প্রকল্পের দুই শতাধিক পরিবার। প্রথমদিকে তাদেরকে ক্ষতিপূরণ দিয়ে কাছাকাছি উপযুক্ত জায়গায় স্থানান্তর করে পূনর্বাসনের সিদ্ধান্ত থাকলেও আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দারা ঘোর আপত্তি জানায়। তারা বলেন, যখন আবাসন প্রকল্প স্থাপিত হয়, তখন এখানকার জমি অনাবাদি, অনূর্বর ছিল। সমস্ত জমি বালুময় ছিল।
ক্রমান্বয়ে তারা এই জমিগুলোতে জৈব সার, সেচ, চাষাবাদ ইত্যাদির মাধ্যমে ভূমি উন্নয়ন করে কৃষিজ জমিতে পরিনত করেন। বর্তমানে উক্ত জমিগুলোই তাদের জীবিকার একমাত্র মাধ্যম। তারা কোনভাবেই অন্যত্র যেতে চান না। তবে শেষ পর্যন্ত আবাসনের পরিবারগুলো পূনর্বাসনের সম্ভাব্য ব্যয়ের আর্থিক বিষয়টি বিবেচনা করে এবং এখানকার বাসিন্দাদের দাবির প্রেক্ষিতে তা করা হচ্ছে না মর্মে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দা হাসান আলী বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চল হলে আমাদের কোন আপত্তি নাই তবে সরকারের নিকট একটাই দাবি আমাদের জীবব-জীবিকার একমাত্র ভরসার আবাদি জমিগুলো যাতে আমাদের কাছ থেকে কেড়ে না নেয়।
তবে এলাকাবাসী মনে করেন, এই ইকোনমিক জোন শুধু পঞ্চগড় নয়, এটি বাস্তাবায়ন হলে বৃহত্তর রংপুর, দিনাজপুর অঞ্চলের অর্থনীতিতে একটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বদলে যাবে এ অঞ্চলের অর্থনীতি। জীবনমান উন্নয়ন হবে এই এলাকার মানুষের। এখানকার প্রায় ২০-৩০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে। এলাকাবাসীর দাবি, যত দ্রুত সম্ভব এই অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হোক।
Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১২:৪০ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩

দৈনিক গণবার্তা |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

সম্পাদকঃ শাহিন হোসেন

বিপিএল ভবন (৩য় তলা ) ৮৯, আরামবাগ, মতিঝিল, ঢাকা ।

মোবাইল : ০১৭১৫১১২৯৫৬ ।

ফোন: ০২-২২৪৪০০১৭৪ ।

ই-মেইল: ganobartabd@gmail.com