আজ, Wednesday


৩১শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
শিরোনাম

এভিয়েশনের প্রতিটি স্তরে সর্বোচ্চ সতর্কতা, স্বচ্ছতা এবং পেশাগত নৈতিকতা বজায় রাখা সময়ের দাবি

বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫
এভিয়েশনের প্রতিটি স্তরে সর্বোচ্চ সতর্কতা, স্বচ্ছতা এবং পেশাগত নৈতিকতা বজায় রাখা সময়ের দাবি
সংবাদটি শেয়ার করুন....

গণবার্তা রিপোর্টার : মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ২১ জুলাই বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর যে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের দুর্ঘটনা ঘটেছে সেটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক। উচ্চ পর্যায়ে সঠিক তদন্ত করে বিমান দুর্ঘটনার কারণ উদ্ঘাটন করা যাবে।

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ২১ জুলাই বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর যে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের দুর্ঘটনা ঘটেছে সেটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক। উচ্চ পর্যায়ে সঠিক তদন্ত করে বিমান দুর্ঘটনার কারণ উদ্ঘাটন করা যাবে। সামরিক ও বেসামরিক বিমান দুর্ঘটনা পৃথিবীব্যাপীই ঘটে থাকে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। সম্প্রতি মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমান বিধ্বস্তের যে ঘটনা ঘটেছে সেটিও নিয়মিত ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক দুর্ঘটনাগুলোর একটি। এ দুর্ঘটনায় এতগুলো নিষ্পাপ শিশুর মৃত্যু কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না। যে কারণে আমরা রাষ্ট্রীয় শোক পালন করেছি। কিছুদিন আগে ভারতে একটা বোয়িং বিমান ক্র্যাশ করেছে। সে ঘটনায়ও হতাহতের সংখ্যা অনেক বেশি। এ থেকে বোঝা যায় যে বিমান দুর্ঘটনা পুরোপুরি প্রতিরোধ করা সম্ভব না, তবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। নিরাপদ উড্ডয়নের জন্য এভিয়েশন এজেন্সি—বিমান বাহিনী বা সিভিল এভিয়েশনসহ সব কর্তৃপক্ষকে অধিকতর সতর্ক হতে হবে। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতেও সুপ্রতিষ্ঠিত ফ্লাইট সেফটি এজেন্সি আছে এবং বিমান দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমানোর জন্য তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

এভিয়েশনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো ফ্লাইট সেফটি। কেননা সব মানুষের জীবন গুরুত্বপূর্ণ—সে বিমানযাত্রী হোক আর বৈমানিক। একই সঙ্গে বিমানের নিরাপত্তাও গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া দেখা যায় যে সব ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করা সত্ত্বেও বিমান বাহিনীতে বিমান দুর্ঘটনা তুলনামূলকভাবে বেশি হয়। কারণ বিমান বাহিনীতে যেসব বিমান অপারেট করা হয় সেখানে সীমাবদ্ধতা আছে। সেই সঙ্গে মানুষেরও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। কিন্তু সিভিল এভিয়েশনের বিমানের ক্ষেত্রে দুর্ঘটনা কম ঘটে। কারণ তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো উন্নত থাকে, যেহেতু তারা প্যাসেঞ্জার বহন করে না। এছাড়া বিমান বাহিনীর ফ্লাইং প্যাটার্নের তুলনায় সিভিল এভিয়েশনের ফ্লাইং প্যাটার্ন ততটা ঝুঁকিপূর্ণ নয়।

গত ৫০ বছরে বিমান বাহিনীতে আনুমানিক ৫০টি বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় ৪০-এর বেশি বৈমানিক মৃত্যুবরণ করেছেন। সাম্প্রতিক দুর্ঘটনায়ও বিমান বাহিনীর বৈমানিক দুর্ভাগ্যজনকভাবে মৃত্যুবরণ করেছেন। প্রয়াত ফ্লাইট লে. তৌকির প্রথমবারের মতো এফটি-৭ বিজি-১ নিয়ে সলো ফ্লাইংয়ে গিয়েছিলেন। এর আগে তিনি অন্য ভেরিয়েন্ট এফ-৭-এর উড্ডয়ন অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন সুদক্ষ পাইলট ছিলেন। পূর্ববর্তী দুটি ধাপে পরীক্ষামূলক উড্ডয়নে উত্তীর্ণ হওয়ার পর তাকে দুই আসনবিশিষ্ট এফটি-৭ বিজি-১ জঙ্গিবিমানে সলো ফ্লাইংয়ে পাঠানো হয়। এ বিমান একই সঙ্গে আকাশযুদ্ধে অন্যান্য একক আসনবিশিষ্ট জঙ্গিবিমানের মতো ব্যবহার করা হয়। শান্তিকালীন নবীন ফাইটার পাইলটদের এয়ার কম্ব্যাট প্রশিক্ষণের জন্য এ বিমান বিশেষভাবে ব্যবহার করা হয়। তিনি অভিজ্ঞ ছিলেন বিধায় স্কোয়াড্রন অধিনায়ক নিজে সবকিছু যাচাই-বাছাই করে তাকে সলো উড্ডয়নের অনুমতি দেন। পাশাপাশি টেকঅফের সময় তাকে রানওয়ের পার্শ্বস্থ মোবাইল এটিসি ভ্যান থেকে তার উড্ডয়ন কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণে রত ছিলেন।

প্রাথমিক সলো ফ্লাইং বিমান উড্ডয়ন এবং অবতরণের সার্কিটের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। বিমান বাহিনীর সব জঙ্গিবিমানের সার্কিট কুর্মিটোলা রানওয়ের পূর্বদিকে অবস্থিত। তিনটি ফ্লাইং সার্কিট শেষে ১৫ মিনিটের মধ্যে তার ল্যান্ড করার কথা ছিল। একটি বেসামরিক বিমান অবতরণ করার সুযোগ দেয়ার লক্ষ্যে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল প্রথম সার্কিট শেষে তাকে অবহিত করে। বিমানটিকে অবতরণের সুযোগ দেয়ার জন্য তাকে এয়ারফিল্ডের পূর্বদিকে হোল্ড করতে বলা হয়েছিল। তার সার্কিট উচ্চতা ১ হাজার ৫০০ ফুট ছিল। এটি জনবহুল এলাকার বাইরে জঙ্গিবিমানের জন্য নিরাপদ উচ্চতা। ওই উচ্চতা থেকে ক্রমান্বয়ে অবতরণের জন্য যে পথ পরিভ্রমণ করে সেটিও জনবসতিশূন্য এলাকা হওয়ার কথা।

তিনি দ্বিতীয় সার্কিটে প্রবেশ করার মুহূর্তে সেই বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটির আভাস দিয়েছিলেন। তবে সেটি যে খুব বেশি গুরুতর ছিল না সেটিও তিনি জানিয়েছিলেন। যে কারণে সেফটি এজেন্সির খুব বেশি তৎপর হওয়ার প্রয়োজন পড়েনি। তার প্ল্যান ছিল বিদ্যমান ত্রুটি নিয়েও নিরাপদে ল্যান্ড করবেন এবং এটি করণীয়ও বটে। যখন ল্যান্ডিং স্লোপে আসার জন্য ফাইনাল টার্ন নেবে তখন তার সুপারভাইজার বা স্কোয়াড্রন কমান্ডার দেখেন যে সে অব্যাহতভাবে উচ্চতা হারাচ্ছে। টার্ন কমপ্লিট করে যখন রানওয়ের দিকে অ্যালাইন হওয়ার কথা। তখন তাকে জানানো হয় যে তিনি অনেক নিচুতে চলে এসেছেন, তার ল্যান্ড করার আগে বিমানকে সঠিক উচ্চতায় নেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়। তার পরও বিমানটি ক্রমাগত উচ্চতা হারাতে থাকে। একপর্যায়ে স্কোয়াড্রন কমান্ডার যখন উপলব্ধি করলেন যে বিমানটি বিপজ্জনকভাবে উচ্চতা হারাচ্ছে যা পাইলট একনলেজ করেন। এরপরও বিমানটি অব্যাহতভাবে উচ্চতা হারাচ্ছিল দেখে তিনি রিপিটেডলি তাকে ইজেক্ট করার নির্দেশ দেন। তখন পাইলটের দিক থেকে কোনো রেসপন্স পাওয়া যায়নি। এরপর বিমানটি ধীরে ধীরে বাম দিকে টার্ন করে রোল আউট করে মাটিতে থুবড়ে পড়ে। বাম দিকে টার্ন নেয়ার মাধ্যমে পাইলট বিমানটিকে খোলা জায়গায় নেয়ার জন্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চেষ্টা করেন। এ কারণে পাইলট শেষ মুহূর্তে ইজেক্ট করেছেন যা নিরাপদ ইজেকশন লিমিটের খুবই নিচে ছিল। তাকে ইজেকশন সিটসহ ক্র্যাশ সাইট থেকে উদ্ধার করা হয়। অবশেষে তিনি সিএমএইচে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।

তিনি ওই বিমানের যান্ত্রিক ত্রুটি ঘোষণা করেছিলেন তবে তাৎক্ষণিকভাবে সেটি খুব বেশি গুরুতর সমস্যা ছিল না বলে প্রতীয়মান হয়। যদি যান্ত্রিক ত্রুটি গুরুতর হতো তাহলে তিনি তখনই ইজেক্ট করতে পারতেন। যেটি তার পদ্ধতিগত ও নৈতিক অধিকার। তিনি যদি স্বাভাবিক প্রশিক্ষণ উচ্চতায় (১০ থেকে ২৫ হাজার ফুট) ট্রেনিং এলাকায় উড্ডয়ন করতেন তাহলে নিরাপদ পদক্ষেপ নেয়ার অনেক সময় পেতেন। কিন্তু তিনি ছিলেন সার্কিট উচ্চতায় (১৫০০ ফুট)। এ উচ্চতা ছিল বড় প্রতিবন্ধকতা। তিনি হয়তো ভেবেছিলেন শেষ পর্যন্ত কোনো ফাঁকা জায়গায় নিরাপদে বিমান ল্যান্ড করতে পারবেন, যে কারণে আমরা দেখেছি বিমানটি বামদিকে ঝুঁকে ছিল। তিনি ঠিকই জানতেন তার কখন ইজেক্ট করা দরকার ছিল কিন্তু তিনি তা করেননি। কারণ তিনি হয়তো ভেবেছিলেন যে নিরাপদে ইজেক্ট করার চেয়ে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া উত্তম। এভিয়েশনে ইজেক্ট করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হলে ইজেক্ট করার কোনো বিকল্প নেই।

এ পর্যায়ে ধারণা করা যায় যে প্রাথমিকভাবে ছোটখাটো একটি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, যদি ককপিটে ইঞ্জিন ফায়ার ওয়ার্নিং আসে, তাহলে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিতে হবে। যুদ্ধবিমানে ইঞ্জিন ফায়ার নেভানোর জন্য ফায়ার এক্সটিংগুইশার থাকে। পাইলটকে ফায়ার এক্সটিংগুইশার প্রেস করে ফায়ার বন্ধ করতে অগ্রাধিকার দিতে হবে। ফায়ার বন্ধ হয়েছে সেটি নিশ্চিত করতে হবে এবং একই সঙ্গে অল্প সময়ের মধ্যে জরুরি অবতরণ করতে হয়। এক্ষেত্রে শেষ পর্যন্ত তিনি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন খোলা জায়গায় যেতে, যাতে কোনো হতাহত না হয়। সাধারণত পাইলটকে মোটিভেটেড করা হয়, বিমান অবতরণের সময় যথাসম্ভব জনশূন্য এলাকায় জরুরি অবতরণের জন্য। সেটি পানি কিংবা কৃষিজমি হতে পারে।

অনেকেই বলতে পারেন, বিমান বাহিনী পুরনো বা অপ্রচলিত বিমান পরিচালনা করছে। সে কথাটি সঠিক নয়। কারণ যেকোনো যুদ্ধবিমানের ৩০-৪০ বছরের জন্য কার্যক্ষমতা থাকে। আবার বিমানটি কত ঘণ্টা ফ্লাই করল সেটিরও একটি সীমাবদ্ধতা থাকে। প্রতি ১ হাজার ঘণ্টা ফ্লাই করার পর বিমানটিকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করা হয়। অর্থাৎ কোনো মেরামতের দরকার আছে কিনা সেটি দেখা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সাধারণত ১০ বছরের জন্য ক্যালেন্ডার লাইফের মেয়াদ বাড়ানো হয় এবং ১ হাজার ঘণ্টা অপারেশনের মেয়াদ বাড়ানো হয়। এভাবে দুবার ওভারহোল করা হয়। এ পন্থা বিমান বাহিনী আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করেই সম্পন্ন করে থাকে।

‘প্র্যাকটিস অব অপারেশন’ এমনভাবে নির্ধারণ করা হয় যেখানে বিমান ও জীবনের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হয়। কারণ বিমান এবং বৈমানিক উভয়ই অতি মূল্যবান জাতীয় সম্পদ। এটি রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। একজন পাইলটকে আকাশযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করতে সর্বনিম্ন চার থেকে পাঁচ বছর লাগে। তার প্রশিক্ষণের পেছনে রাষ্ট্রের ব্যয় অনেক। প্রতিটি মিশনে অর্থাৎ প্রতি ঘণ্টার ফ্লাই করতে লাখ লাখ টাকা ব্যয় হয়। সর্বনিম্ন ৩০০ থেকে ৫০০ ঘণ্টা ফ্লাই করার পর সে আকাশযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়। একজন পাইলটের পেছনে জাতি প্রচুর বিনিয়োগ করে, যেটি সম্পদে রূপান্তর হয়। যারা কমান্ডে আছে, তাদের নৈতিক দায়িত্ব এ সম্পদকে রক্ষা করা। যারা সুপারভাইজার তারা নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। সেখানে কোনো শিথিলতার অবকাশ নেই। প্রত্যেকটি মিশনের আগে একজন পাইলটকে মেডিকেল পরীক্ষা করার মাধ্যমে তার ‘ফ্লাইং ফিটনেস’ নিরূপণ করা হয়। কেবল ‘ফ্লাইং ফিটনেস’ উত্তীর্ণ হলেই তাকে মিশনের জন্য অনুমতি দেয়া হয়।

যুদ্ধবিমান যাচাই ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একটি টিম আছে। তারা প্রতিনিয়ত যুদ্ধবিমানকে যাচাই ও রক্ষণাবেক্ষণ করছে। যদি কোনো ত্রুটি থাকে সেগুলো সংশোধন করে ফ্লাইংয়ের জন্য ক্লিয়ারেন্স দেয়া হয়। যখন কোনো যুদ্ধবিমান ফ্লাইংয়ের জন্য ঘোষণা হয় তখন এটি সার্ভিসের জন্য শতভাগ প্রস্তুত। এর অর্থ এর মধ্যে কোনো ত্রুটি নেই। যেহেতু একটি যুদ্ধবিমানের মধ্যে সহস্রাধিক যন্ত্রাংশ থাকে, ফ্লাইংয়ের সময় কোনো যন্ত্রে ত্রুটি ধরা পড়লে সেই যুদ্ধবিমানকে তাৎক্ষণিক অবতরণ করাতে হয়। যদি এ ত্রুটি নিয়ে ফ্লাই করা হয় তাহলে অন্যান্য যন্ত্রপাতিকেও তা প্রভাবিত করে। তখন যুদ্ধবিমানকে নিরাপদে ফেরত আনা হয়তো সম্ভব হয় না।

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে সংঘটিত বিমান দুর্ঘটনাটি একটি গভীরভাবে মর্মান্তিক ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বসম্পন্ন ঘটনা, যা শুধু বাংলাদেশের বিমান নিরাপত্তা ব্যবস্থার সক্ষমতা নয়, বরং সামগ্রিকভাবে ফ্লাইট সেফটি, প্রশিক্ষণ, রক্ষণাবেক্ষণ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার ওপর প্রশ্ন তোলে। যদিও যুদ্ধবিমান পরিচালনায় প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা ও ঝুঁকি স্বাভাবিক, তবে এ দুর্ঘটনায় একাধিক পর্যায়ে ছোটখাটো বিচ্যুতির সম্মিলিত ফলাফল একটি বড় বিপর্যয়ে রূপ নিয়েছে।

একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় খতিয়ে দেখার অবকাশ রয়েছে। আমাদের দেশের সর্ববৃহৎ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপদে বিমান পরিচালনার পরিবেশ এবং পরিকাঠামো বিদ্যমান কিনা তা গভীরভাবে পর্যালোচনার দাবি রাখে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো হচ্ছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং মাইলস্টোন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

ত্রিশের অধিক নিহত কোমলমতি শিশু যারা দেশের ভবিষ্যৎ, একজন প্রশিক্ষিত বৈমানিক ও একটি যুদ্ধবিমান—সবই জাতীয় সম্পদ। সবার সুরক্ষা নিশ্চিত করাই হবে ভবিষ্যতে এ ধরনের মর্মান্তিক দুর্ঘটনা এড়ানোর একমাত্র পথ।

সর্বোপরি জাতীয় পর্যায়ে এ দুর্ঘটনা একটি সতর্কবার্তা—এভিয়েশনের প্রতিটি স্তরে সর্বোচ্চ সতর্কতা, স্বচ্ছতা, সততা এবং পেশাগত নৈতিকতা বজায় রাখা এখন সময়ের দাবি।

এয়ার কমডোর (অব.) এম শফিকুল ইসলাম: এনডিসি, এডব্লিউসি, পিএসসি, জিডি (পি), সাবেক সহকারী বিমান বাহিনী প্রধান, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১১:১৯ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫

দৈনিক গণবার্তা |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

সম্পাদকঃ শাহিন হোসেন

সহকারী সম্পাদকঃ মোঃ শাহ পরান হাওলাদার

বিপিএল ভবন (৩য় তলা ) ৮৯, আরামবাগ, মতিঝিল, ঢাকা ।

মোবাইল : ০১৭১৫১১২৯৫৬ ।

ফোন: ০২-২২৪৪০০১৭৪ ।

ই-মেইল: ganobartabd@gmail.com