কখনোই কাউকে অবজ্ঞা করার প্রয়োজনবোধ করবেন না; সর্বশক্তিমান আল্লাহতায়ারা আপনাকে সম্পদ, ক্ষমতা, সৌন্দর্য ইত্যাদি যা কিছু দিয়েছেন তার কোনো কিছুর জন্যই নয়। তার শক্তি ও ক্ষমতার কথা মনে রাখুন এবং কীভাবে তিনি আপনার প্রতি দেওয়া আশীর্বাদ এক ঝটকায় কেড়ে নিতে পারেন সেটি ভাবুন।
আপনি যখন ভালো কিছু অর্জন করেন, তখন বিদ্বেষীদের পূর্ণ শক্তিতে বেরিয়ে আসার জন্য প্রস্তুত হন। তারা আপনাকে উপহাস করতে পারে, আপনার সম্পর্কে গুজব ছড়াতে পারে অথবা এমনকি কঠোর শব্দও বলতে পারে। এতে উদ্বিগ্ন হবেন না। যা সঠিক তার ওপর ফোকাস করুন এবং চালিয়ে যান। সর্বশক্তিমান আল্লাহ আপনার পাশে আছেন।
আপনি যখন রাস্তাটি দীর্ঘ এবং চ্যালেঞ্জময় দেখছেন তখনও চলা অব্যাহত রাখুন। যখন আপনার খারাপ দিন মনে হয় এবং আপনি হাল ছেড়ে দিতে চান তখনও চালিয়ে যান। যখন আপনার ধৈর্য্য শেষ হয়ে আসছে বলে মনে হয় তখনও চালিয়ে যান। চালিয়ে যান এ কারণে যে দয়াময় আল্লাহ আপনার লড়াই সম্পর্কে জানেন। যদি কেবলমাত্র আপনি জানতেন যে কি পুরষ্কার আপনার জন্য অপেক্ষা করছে!
শুধু একটি কথা মনে রাখবেন, চিন্তাকে পরিশুদ্ধ রাখুন। নেতিবাচক চিন্তাভাবনার মাধ্যমে আল্লাহতায়ালা আপনার পথে ভালো যা কিছু পাঠিয়েছেন তাকে অবমূল্যায়ন বন্ধ করুন। এই ধরনের চিন্তাভাবনাকে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখুন। যা কিছু সত্য, সম্মানজনক, ন্যায়, খাঁটি, সুন্দর এবং প্রশংসনীয় তা বলুন এবং তা নিয়ে ভাবুন। ইতিবাচক থাকুন আর আপনার জীবন রূপান্তরিত হবে!
সর্বশক্তিমান আল্লাহতায়ালা আমাদের চারপাশে যা কিছু চলছে তাতে আমাদের বিচলিত না হবার তওফিক দিন। ব্যর্থতা, হতাশা এবং ক্লান্তিতে ফোকাস করা সহজ। কিন্তু তার দরকার আমাদের নেই। পরিবর্তে, আমাদের একবারে একটি পদক্ষেপ নিতে সহায়তা করুন কারণ আমরা জানি যে আপনি সবকিছুর ওপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আছেন। আমরা যেন আপনার ডিক্রির কাছে নিজেদের সমর্পণ করতে পারি।
মূল কথা হলো, আপনাকে অনুপ্রাণিত করতে এবং জীবন গড়ে তোলার জন্য আপনি সত্যি সত্যিই লোকদের ওপর নির্ভর করতে পারবেন না। সত্য হলো প্রত্যেকেই তাদের নিজের জীবনে এতটাই আচ্ছন্ন যে, তাদের কাছে অন্যদের জন্য খুব বেশি বা কোনো সময় নেই। নিজেকে উৎসাহিত করতে শিখুন। তবে সর্বশক্তিমান আল্লাহতায়ালাকে সমীকরণের বাইরে রাখবেন না।
যখনই আপনার জীবনে একটি দরজা বন্ধ হয়, এর মানে হলো সর্বশক্তিমান আল্লাহতায়ালা চান যে আপনি এগিয়ে যান। সামনে যেতে থাকুন, ফিরে তাকাবেন না। তিনি আপনার পদক্ষেপের নির্দেশনা দিচ্ছেন। আপনার তাকে বিশ্বাস করতে হবে। পরিবর্তন কখনোই সহজ নয়। অজানা কিছু অস্থিরতাপূর্ণ হতে পারে। কিন্তু তিনি আমাদের রিজিকের মালিক; অতত্রব কেন এতো চিন্তা করবেন?
কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ! তোমাদের কাছে যদি কোনো ফাসেক ব্যক্তি কোনো সংবাদ নিয়ে আসে, তবে তা যাচাই করো। অজ্ঞতাবশত কোনো গোষ্ঠীকে আক্রান্ত করার আগেই, (না হলে) তোমরা কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হবে।’ -সূরা হুজুরাত: ৬
আল্লাহতায়ালা আরও বলেছেন, ‘তোমরা পরস্পরের দোষচর্চা করো না। তোমাদের কেউ কি তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করবে? নিশ্চয়ই তোমরা তা অপছন্দ করবে। তোমরা আল্লাহকে ভয় করো, নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমাশীল ও দয়ালু।’ -সূরা হুজুরাত: ১২
‘যখন তাদের কাছে নিরাপত্তা বা ভয়ের কোনো সংবাদ পৌঁছে, তখন তারা তা প্রচার করে। যদি তারা তা (সংবাদটি) রাসুল বা তাদের দায়িত্বশীল ব্যক্তির দৃষ্টিগোচর করত, তবে তাদের (দায়িত্বপ্রাপ্ত) অনুসন্ধানকারীরা তার যথার্থতা নির্ণয় করতে পারত। তোমাদের প্রতি যদি আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমত না থাকত, তবে সামান্যসংখ্যক ব্যতীত সবাই শয়তানের অনুসরণ করত।’ -সূরা আন নিসা: ৮৩
হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কোনো ব্যক্তির মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে কোনো কথা শোনামাত্রই (তার সত্যতা যাচাই না করেই) মানুষের কাছে বলে বেড়ায়।’ -সুনানে আবু দাউদ: ৪৯৯২
Posted ৮:০৭ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ১২ মে ২০২৫
দৈনিক গণবার্তা | Gano Barta