নবীগঞ্জ(হবিগঞ্জ)প্রতিনিধি : নবীগঞ্জ পৌর এলাকার মায়ানগর গ্রামের জায়েদা খাতুন নিজের সম্পত্তি ভূমি খেকোদের কবল থেকে রক্ষা করার জন্য বিজ্ঞ আদালতে ১৪৪ ধারা’য় মামলা দায়ের করেন। উক্ত ১৪৪ ধারা অমান্য করে মসজিদের নামে সাইন বোর্ড ব্যবহার করে বাদীর ভুমি জবর দখলের চেষ্টা করছেন ভুমি খেকোরা। এনিয়ে দু’দলের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংখ্যা রয়েছে। ঘটনাটি বৃহস্পতিবার সকালে পৌর এলাকার মায়ানগর গ্রামে সংঘটিত হয়। শুক্রবার স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় ফলাও করে সংবাদ প্রকাশিত হয় । ১৪৪ ধারায় মামলা দায়ের এবং পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের জের ধরে শুক্রবার সন্ধ্যায় বিবাদী মোশাহিদ আলীর নেতৃত্বে একদল লোক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জায়েদা খাতুনের বাড়ী-ঘরে অর্তকিত হামলা করে। এ সময় দূবৃর্ত্তরা ঘরের আসভাবপত্র, টিন ভাংচুর করে। এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে হামলাকারীরা জায়েদা খাতুনের বোন খালেদা বেগম (৩৮ )কে জিআর পাইপ দিয়ে আঘাত করলে তার বাম হাতের কব্জি ভেঙ্গে যায়। এ ঘটনায় জায়েদা বেগমের বৃদ্ধ মা আছিয়া খাতুনও আহত হন। এ সময় হামলাকারীরা ঘরে ভিতরে থাকা আলমিরা ভেঙ্গে নগট টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদেরকে রক্ষা করে। স্থানীয় লোকজন আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন। উল্লেখ্য, নবীগঞ্জ-বাহুবলের প্রাক্তন এমপি মরহুম খলিলুর রহমান চৌধুরী রফি’র মালিকানাধীন ২৬ শতক ভুমি খরিদ করেন মায়ানগর গ্রামের আছিয়া খাতুন ও তার মেয়ে জায়েদা খাতুন। কিন্তু কাগজ জটিলতায় ১৯ শতক রেজিস্ট্রারী হলেও ৭ শতক ভুমি পরবর্তীতে রেজিস্ট্রারী করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে একখানা স্মরনার্থ লিপি প্রদান করেন। দীর্ঘদিন ধরে আছিয়া খাতুন ও জায়েদা বিবি উক্ত ভুমি ভোগ দখল করে আছেন। সম্প্রতি একই গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে মোশাহিদ আলী, টেনাই মিয়ার ছেলে জামির মিয়া, তাবেদ আলী, মর্তুজ আলী, জসিম মিয়া গংরা মসজিদ নির্মাণের নামে আছিয়া খাতুনের দখলীয় ভুমি জবর দখলের চেষ্টা করে। এ নিয়ে আছিয়া খাতুন ও জায়েদা খাতুন বিজ্ঞ আদালতে ১৪৪ ধারায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ বিরোধীয় ভুমিতে কোন কাজ কর্ম না করার জন্য নোটিশ প্রদান করেন। কিন্তু দখলকারীরা আইনের তোয়াক্কা না করে বৃহস্পতিবার সকালে জোরপুর্বক ওই ভুমিতে জবর দখলের চেষ্টা করলে নিরীহ আছিয়া খাতুন বাধাঁ প্রদান করেন। ফলে তারা উত্তেজিত হয়ে আছিয়া খাতুনের বাড়ী ঘরে হামলা করেন। এ সময় মোশাহিদ আলী হুংকার দিয়ে বলে, প্রয়োজনের একাধিক মার্ডার হবে ওই ভুমিতে বাধাঁ দিলে।
উল্লেখ্য, মোশাহিদ আলী, তার ভাই সদর উদ্দিন, জামির মিয়ার সহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন চুরি ডাকাতির মামলা রয়েছে বলে সুত্রে জানাগেছে। উক্ত ভুমি দখল-বেদখল নিয়ে যে কোন মুহুর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংখ্যা করছেন এলাকাবাসী। এই সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশ ও মামলা দায়েরের সুত্রধরেই শুক্রবার সন্ধ্যায় নিরীহ আছিয়া খাতুনের বাড়ীঘরে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এ ব্যাপারে মোশাহিদ জানায়, তার ছেলেকে পানিতে পেলে দেয়ার কারনে তারা এই প্রতিবাদ করেছে। গুরুতর আহত খালেদা বেগম জানান, তারা রাতের রান্নার কাজে ব্যস্থ। এ সময় হঠাৎ মোশাহিদের নেতৃত্বে একদল অস্ত্রধারী লোকজন তাদের বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট শুরু করে। বাধাঁ দেয়ায় তাদের অস্ত্রের আঘাতে সে ও তার মা গুরুতর আহত হন। তার বাম হাতের কব্জি ভেঙ্গে যাওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট প্রেরন করেছেন স্থানীয় ডাক্তার। আছিয়া খাতুন বলেন, মায়ানগর গ্রামবাসীর জামে মসজিদ থাকা সত্বেও প্রায় ৫০ গজের মধ্যে কয়েক পরিবার মেশাহিদগংরা মসজিদের নাম ব্যবহার করে তার দখলীয় ভুমি জবর দখলের চেষ্টা করছে। এ জন্য তিনি বিজ্ঞ আদালতে ১৪৪ ধারায় মামলা দায়ের করায় তারা দু’দফা হামলা করেছে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের রক্ষা করেন।