আন্তর্জাতিক ডেস্ক : হিজবুল্লাহর ওপর ইসরায়লের রাতভর অব্যাহত বিমান হামলায় গতকাল সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দক্ষিণ লেবানন থেকে হাজার হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে। লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় ৩৫ শিশুসহ অন্তত ৪৯২ জন নিহত এবং ১ হাজার ৬৪৫ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। ২০০৬ সালের পর থেকে ইসরাইল-হিজবুল্লাহ সংঘাতে এটিই ছিল সবচেয়ে প্রাণঘাতী দিন। খবর আল জাজিরা।
রাতে উত্তর ইসরায়েলের দিকে হিজবুল্লাহর নিক্ষিপ্ত রকেটগুলো হয় ধ্বংস করা হয়েছে অথবা খোলা এলাকায় পড়েছে বলে আইডিএফ জানিয়েছে। ইসরায়েল বলেছে যে, তারা হিজবুল্লাহর ওপর তাদের আক্রমণ আরো বাড়িয়েছে।
দক্ষিণ লেবাননের নাগরিকেরা চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে ফোন বার্তা পেয়েছিল, যাতে তাদের ইরান সমর্থিত গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর ব্যবহৃত স্থানগুলো ছেড়ে যাওয়ার জন্য সতর্ক করা হয়। দশ হাজারেরও বেশি মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর আদেশের পর দ্রুত সরে যাওয়ার জন্য তাদের সত্যিই খুব বেশি সময় ছিল না।
দক্ষিণ লেবানন থেকে দেশটির উত্তর দিকে পুরো পরিবার নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে আতঙ্কিত মানুষ। বৈরুতের প্রায় ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত সিদন শহরে চলে গেছে অনেকেই। অন্যরা বৈরুতে পৌঁছেছে, আবার কেউ কেউ আরো উত্তরে চলে গেছে। কোন রাস্তা নিরাপদ সেটাই তারা জানতেন না বলে জানিয়েছে আল জাজিরার এক সংবাদকর্মী। তিনি জানান, দক্ষিণ লেবাননের সঙ্গে বৈরুতের সংযোগকারী প্রধান মহাসড়কের পাশেও তিনি বিমান হামলা হতে দেখেছেন।
লেবানন সরকার স্কুলগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। সেগুলোতে খোলা হচ্ছে আশ্রয়কেন্দ্র। প্রায় ১০ হাজার মানুষের আশ্রয় ও সেবা নেয়া দরকার বলেও জানান স্থানীয় সেই সংবাদকর্মী। তিনি বলেন, আমাদের দেশ বেশ দরিদ্র। অর্থনীতি প্রায় ধসে পড়েছে। রাষ্ট্র হিসেবে অনেকটাই দেউলিয়া লেবানন। তাই এই মানুষদের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে যে, তারা কতদিন বাস্তুচ্যুত থাকবে। কারণ, ইতোমধ্যে ১১ মাসের লড়াইয়ে সীমান্তের গ্রামগুলো থেকে প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। গত সপ্তাহে হিজবুল্লাহ সদস্যদের ওপর বিস্ফোরক ডিভাইস হামলার পর সীমান্ত পেরিয়ে ইসরায়েলের হামলা আরো বাড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। এতে মধ্যপ্রাচ্যে পূর্ণমাত্রার আঞ্চলিক সংঘাতের আশঙ্কাও বেড়েছে অনেকখানি।
Posted ৯:৫৪ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
দৈনিক গণবার্তা | Gano Barta