আজ, শনিবার


২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
শিরোনাম

সিলেটে নাগা মরিচের বাণিজ্যিক চাষ বাড়ছে

রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩
সিলেটে নাগা মরিচের বাণিজ্যিক চাষ বাড়ছে
সংবাদটি শেয়ার করুন....

গণবার্তা রিপোর্টার: সিলেটের জৈন্তাপুরে নাগা মরিচ চাষে ব্যস্ত কৃষক ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী
সিলেটে প্রধান অর্থকরী ফসল ধান। পাশাপাশি শিম, জারা লেবু, ফরাসও উৎপাদন হয় এ অঞ্চলে। বাজারে চাহিদা থাকায় এখন বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে নাগা মরিচও। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এ মরিচ দেশের বাইরেও রফতানির সম্ভাবনা রয়েছে। সিলেটের জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট ও সদর উপজেলার একাংশে নাগা মরিচ চাষ হচ্ছে।

সিলেট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে সিলেটে ৫০ হেক্টর জমিতে নাগা মরিচ চাষ করে ২২৫ টন উৎপাদন হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫৩ হেক্টর জমি থেকে ২৫০ টন উৎপাদন হয়। ২০২২-২৩ অর্থবছরে মরিচ চাষ বেড়ে ১৪১ দশমিক ৫ হেক্টর দাঁড়ায়। ওই বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে উৎপাদন কমে দাঁড়ায় ১৫৬ টনে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আগের অর্থবছরের তুলনায় চাষের পরিমাণ ও উৎপাদন বেশি হবে বলে আশা করছেন কৃষক।

সিলেট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ খয়ের উদ্দিন মোল্লা বণিক বার্তাকে বলেন, ‘ধান, শিম, জারা লেবু, ফরাসের পাশাপাশি সম্প্রতি নাগা মরিচও উৎপাদন হচ্ছে। সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় ছয় শতাধিক কৃষক নাগা মরিচ চাষ করছেন। ভালো ফলন হওয়ায় লাভবান হচ্ছেন কৃষক। দেশে ও বিদেশে অবস্থানরত সিলেটের মানুষের কাছেই নাগা মরিচের চাহিদা বেশি। সিলেটের মানুষ যেসব দেশে আছেন; সেখানে নাগা মরিচ রফতানি করতে পারলে উৎপাদন আরো বাড়বে।’

কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একসময় বাড়ির আঙিনায় নাগা মরিচ চাষ হতো। গত কয়েক বছর তা ছাড়িয়ে ফসলি জমিতে চাষ হচ্ছে। বাণিজ্যিকভাবে নাগা মরিচ চাষ করে লাখপতি হয়েছে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার সাত শতাধিক পরিবার। অন্য উপজেলাগুলোয়ও নাগা মরিচ চাষ শুরু হয়েছে। জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর, উপরশামপুর, দলইপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক হারে বেড়েছে নাগা মরিচের চাষ। অল্প পুঁজিতে দ্বিগুণের চেয়েও বেশি লাভের কারণে নাগা মরিচ চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকের।

হরিপুরের উপরশামপুরের বেলাল আহমদ বলেন, ‘গত বছর তিন বিঘা জমিতে আড়াই লাখ টাকা খরচ করে নাগা চাষ করেছি। ৭-৮ লাখ টাকা লাভ হয়েছে। জমি না পাওয়ায় এবার কম চাষ করতে হয়েছে। ভালো ফলন হলে এবারো লাভ হবে। মৌসুমের শুরুতে যখন চাহিদা বেশি থাকে; তখন ৫০ কেজি সমপরিমাণ বস্তা নাগা মরিচ ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। পরে আস্তে আস্তে দাম কমে। ঢাকার ব্যবসায়ীদের কাছে বেশির ভাগ মরিচ বিক্রি করা হয়। স্থানীয়রা কেজি দরে নাগা মরিচ কেনেন। সেক্ষেত্রে কেজি ৪০০-৫০০ টাকা পড়ে।’

নাগা মরিচ ব্যবসায়ী সফিক মিয়া বলেন, ‘হরিপুর, জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কানাইঘাটসহ বিভিন্ন এলাকার কৃষকের সঙ্গে যোগাযোগ করে নাগা মরিচ সংগ্রহ করি। এসব মরিচ ঢাকার যাত্রাবাড়ী, গাজীপুর, কারওয়ান বাজার, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করি। প্রথম অবস্থায় কেজি ৭০০-৮০০ টাকা দামে কিনি। এক কেজিতে ২০০টির মতো মরিচ থাকে। পরে কিছুটা কম দামে কেনা যায়।’ হরিপুর এলাকা থেকে প্রতিদিন ৩০ কেজি ওজনের ৪০-৪৫ কার্টন নাগা মরিচ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করেন তিনি।

জালালাবাদ ভেজিটেবল অ্যান্ড ফ্রোজেন ফিশ এক্সপোর্টার্স গ্রুপের প্রেসিডেন্ট মো. মোস্তাফিজুর রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বিভিন্ন সময় সবজি পণ্য বিদেশে রফতানি হয়। সম্প্রতি নাগা মরিচও এর তালিকায় যুক্ত হয়েছে। এখন নাগা মরিচ চাষের মৌসুম। উৎপাদন শেষে কিছু ব্যবসায়ী মাঠ পর্যায় থেকে সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠিয়ে দেয়। পরে ঢাকা থেকে রফতানি হয় মরিচ।’

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৩:১৭ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩

দৈনিক গণবার্তা |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

সম্পাদকঃ শাহিন হোসেন

বিপিএল ভবন (৩য় তলা ) ৮৯, আরামবাগ, মতিঝিল, ঢাকা ।

মোবাইল : ০১৭১৫১১২৯৫৬ ।

ফোন: ০২-২২৪৪০০১৭৪ ।

ই-মেইল: ganobartabd@gmail.com