নিজস্ব প্রতিনিধি: জয়পুরহাটে গত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে সরিষার আবাদ ৪৫ শতাংশ বেড়েছে। কৃষক বলছেন, কম খরচে সরিষা আবাদে বেশি লাভ। এছাড়া ভোজ্যতেলের দাম বাড়ায় জেলায় বেশি পরিমাণ জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। এজন্য কৃষককে প্রণোদনাসহ সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
জয়পুরহাট কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় সরিষার চাষ হয়েছে ২১ হাজার ৩৪৯ হেক্টর জমিতে। গত বছর চাষ হয়েছিল ১৪ হাজার ৬৬০ হেক্টরে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ৬ হাজার ৬৮৯ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ বেড়েছে। এ থেকে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৬ হাজার ২৯৮ টন।
জয়পুরহাট সদর উপজেলার কড়ই, বম্বু, দস্তপুর, পুরানাপৈল, সোটাহার, পাঁচবিবি উপজেলার বাগজানা, আয়মারসুলপুর, কড়িয়া, ফিসকারঘাট, আক্কেলপুর উপজেলার ইসলামপুরসহ বেশকিছু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গাছে গাছে সরিষার দানা আসতে শুরু করেছে। এসব এলাকার কৃষক বলছেন, কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় তারা সরিষা আবাদ করেন। এছাড়া আমদানীকৃত সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় সরিষা তেলের চাহিদাও বেড়েছে। এজন্য এ অঞ্চলের কৃষক সরিষা চাষ করছেন।
সদর উপজেলার কড়ই উত্তরপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল মোত্তালেব বলেন, ‘গত বছর আমি ছয় বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছিলাম। ভালো দাম পাওয়ায় এবার করেছি নয় বিঘা জমিতে।’
কৃষক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এবার ছয় বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছি। ছয় হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। অন্য ফসলের চেয়ে সরিষা চাষে ঝামেলা কম। এছাড়া সেচ দিতে হয় না। প্রথমে জমিতে হালচাষ করে সরিষার বীজ বপন করার পর একবার সার দিলেই ভালো ফলন পাওয়া যায়।’ এবার বিঘাপ্রতি ২০-২৫ হাজার টাকার সরিষা উৎপাদন হবে বলে প্রত্যাশা করছেন তিনি।
কৃষকের দাবি, সারের দাম বাড়ায় গত বছরের চেয়ে এবার বিঘাপ্রতি ২ হাজার টাকা খরচ বেশি হয়েছে। সে হিসাবে প্রতি বিঘায় প্রায় ৭ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। এক বিঘা জমিতে সর্বোচ্চ আট মণ ফলন পাওয়া যায়।
পাঁচবিবি উপজেলার কড়িয়ার কুতুবুল ইসলাম জানান, কয়েক বছর আগে আলুর আবাদ করতাম। আলু চাষ করে লোকসান হয়েছিল। তাই এবার সরিষার চাষ করেছি। অল্প সময়ে সরিষার ফলন পাওয়া যায়। খরচও কম।
আক্কেলপুর উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের কৃষক হাসান আলী বলেন, ‘গত বছর এ এলাকায় এত সরিষার আবাদ ছিল না। সয়াবিন তেলের দাম বেশি হওয়ায় কৃষক সরিষার চাষ বেশি করেছেন। আমিও এবার সাড়ে চার বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছি। এক বিঘায় ছয়-সাত মণ ফলন হয়। ২-৩ হাজার টাকা মণ বিক্রি করা যায়।’
Posted ৫:৩৯ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ২০ জানুয়ারি ২০২৪
দৈনিক গণবার্তা | Gano Barta