স্টাফ রিপোর্টার : পদ্মা সেতু প্রকল্পে অনিয়মের যথেষ্ট উপাদান ও প্রমাণ থাকার পরও গায়ের জোরে অভিযুক্তদের মামলা থেকে দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর পরামর্শক নিয়োগ নিয়ে যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল, তা নিয়ে মামলা হয়। মামলার উপাদান যথাযথ থাকা সত্ত্বেও পরে ফাইনাল রিপোর্ট ট্রু (এফআরটি) জমা দিয়ে নিষ্পত্তি করা হয়। মঙ্গলবার (১ জুলাই) বিকেলে সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে দুদকের দায়িত্ব নেওয়ার পর মামলাটি আবারও বিবেচনায় আনা হয়। আমাদের মনে হয়েছে, অনেকটা গায়ের জোরে মামলাটি চাপা দেওয়া হয়েছিল। তাই আমরা এটি পুনরুজ্জীবিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং নতুন করে তদন্ত শুরু করেছি।
২০১২ সালে বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির আশঙ্কায় পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন স্থগিত করে। এরপর আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ওই বছরের ১৭ ডিসেম্বর বনানী থানায় মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক আবদুল্লাহ আল জাহিদ। মামলায় সাতজনকে আসামি করা হয় মামলায় আসামিরা হলেন- তৎকালীন সেতু সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, সেতু কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কাজী মো. ফেরদৌস, সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রিয়াজ আহমেদ জাবের, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড প্ল্যানিং কনসালটেন্ট লিমিটেডের উপব্যবস্থাপক ও এসএনসি লাভালিনের স্থানীয় প্রতিনিধি মোহাম্মদ মোস্তফা, এসএনসি লাভালিনের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ ইসমাইল, আন্তর্জাতিক প্রকল্প বিভাগের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট রমেশ সাহ এবং কেভিন ওয়ালেস। মামলার প্রধান আসামি ছিলেন তৎকালীন সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। তাকে গ্রেফতার করে সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও পরে জামিনে মুক্তি পেয়ে তিনি পুনরায় চাকরিতে ফিরে আসেন। এসব বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, সরকারি ক্রয়বিধি অনুযায়ী পিপিএ এবং পিপিআর অনুসরণ করে কাজ করার কথা থাকলেও প্রকল্পে তা মানা হয়নি। মূল্যায়ন কমিটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে একাধিকবার পরিবর্তন করা হয়েছে। একই জিনিস বারবার কেনা হয়েছে বলেও অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে। কনসালট্যান্টদের সিভি মূল্যায়ন যথাযথ করা হয়নি। মূল্যায়ন কার্যক্রমের বাধ্যতামূলক সাক্ষাৎ ও তথ্য যাচাই করা হয়নি। এতে স্পষ্ট অনিয়ম দেখা গেছে। তিনি বলেন, আগের প্রতিবেদনটি ত্রুটিপূর্ণ ও অসম্পূর্ণ ছিল। তাই আমরা নতুনভাবে তদন্ত শুরু করেছি। তদন্ত কর্মকর্তাকে একটি পূর্ণাঙ্গ ও নির্ভরযোগ্য প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে, যাতে মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করা যায়। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আব্দুল মোমেন বলেন, যাদের প্রথম দফায় আসামি করা হয়েছিল, তাদের তো ডাকা হবেই। তবে তদন্তে যদি নতুন কেউ যুক্ত হয় বা গাফিলতির প্রমাণ মেলে, তাকেও অন্তর্ভুক্ত করা হবে। দুদক চেয়ারম্যান আরও বলেন, কমিশন একটি নির্দিষ্ট পরিসরের স্বাধীনতা ভোগ করে। সেই স্বাধীনতার অপব্যবহার হলে সেটাও খতিয়ে দেখা হবে। আমরা চাই, কমিশনের পক্ষ থেকে যদি কোনো ত্রুটি বা ব্যত্যয় হয়, তা চিহ্নিত করা হোক। প্রাথমিক অনুসন্ধানে আমাদের ধারণা, এ মামলায় এফআরটি দেওয়া ঠিক হয়নি অথবা সঠিকভাবে উপস্থাপন করা হয়নি। এখন আমরা নতুন তদন্ত প্রতিবেদনের অপেক্ষায়
Posted ১২:১৬ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫
দৈনিক গণবার্তা | Gano Barta