নিজস্ব প্রতিনিধি: শুক্রবার ইজতেমা মাঠে স্থান সংকুলান না হওয়ায় মহাসড়কের ওপর মুসল্লিরা জুমার নামাজে অংশ নেন। গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে শুরু হয়েছে তাবলীগ জামাতের শীর্ষ জমায়েত বিশ্ব ইজতেমা। শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) ফজর নামাজের পর আম বয়ানের মধ্য দিয়ে ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। আম বয়ান করেন বিশ্ব ইজতেমার শীর্ষ মুরব্বি পাকিস্তানের মাওলানা আহমদ বাটলার। তার এ বয়ান বাংলায় অনুবাদ করেন মাওলানা নুরুর রহমান।
ইজতেমার প্রথম দিন শুক্রবার হওয়ায় দেশ বিদেশের লাখ লাখ মুসল্লির অংশগ্রহণে ইজতেমা ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় দেশের বৃহত্তম জুমার নামাজ। তাবলীগ জামাতের লোকজন ছাড়াও গাজীপুর ও আশপাশের জেলা থেকে লাখ লাখ সাধারণ মানুষও জুমার নামাজে অংশ নেন। সকাল থেকেই ইজতেমার মূল ময়দান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। জুমার নামাজে অংশ নিতে আগত মুসল্লিরা এ সময় বিভিন্ন সড়ক মহাসড়ক, খালি জায়গা ও বাসা বাড়ির ছাদে অবস্থান নেন। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক এবং কামারপাড়া সড়কের ওপরও হাজারো মানুষ দাঁড়িয়ে জুমার জামাতে শরিক হওয়ায় কিছু সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে যায় গাড়ি চলাচল। নামাজ শেষে মানুষ মহাসড়ক থেকে সরে যেতে শুরু করলেও ওই পথে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে সময় লাগে প্রায় এক ঘণ্টা। জুমার নামাজে খুৎবা পাঠ শুরু হয় দুপুর দেড়টায়। নামাজ শুরু হয় পৌনে দুইটায়। এতে ইমামতি করেন বাংলাদেশে তাবলীগ জামাতের শীর্ষ মুরব্বি ও রাজধানীর কাকরাইল মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ জুবায়ের।
অন্যান্য বছরের মতো এবারো যথারীতি ময়দানে উপস্থিত ধর্মপ্রাণ মানুষের উদ্দেশে তাবলিগের ছয় উসুল অর্থাৎ কালেমা, নামাজ, এলেম ও জিকির, একরামুল মুসলিমিন, সহীহ নিয়ত ও তাবলীগ বিষয়ে আম বয়ানের মাধ্যমে ইজতেমার কার্যক্রম শুরু হয়। এবারো বিশ্ব ইজতেমায় বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের তাবলিগ মারকাজের শুরা সদস্য ও মুরব্বিরা বয়ান পেশ করবেন। মূল বয়ান উর্দুতে হলেও তাৎক্ষণিকভাবে বাংলা, ইংরেজি, আরবিসহ বিভিন্ন ভাষায় তা অনুবাদ করা হয়।
ইজতেমা ময়দানের মুরুব্বি প্রকৌশলী আব্দুন নূর জানান, বিশ্ব ইজতেমায় আসা বিদেশী মেহমানদের জন্য ময়দানের উত্তর-পশ্চিম পাশে টিন দিয়ে কামরা তৈরি করা হয়েছে। বিভিন্ন দেশ থেকে আগত তাবলীগ জামাতের লোকজন তাদের জন্য নির্ধারিত স্থানে অবস্থান নিয়েছেন।
ইজতেমা আয়োজক কমিটির গণমাধ্যম সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান জানান, শুক্রবার পর্যন্ত ইজতেমায় অংশ নিতে আসা ৪ মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টায় মৃত্যু হয় এখলাস মিয়া (৭০) নামের এক মুসল্লীর। তার বাড়ি নেত্রকোনা জেলার বুরুজুরী স্বল্পদিঘীয়া গ্রামে। ভোররাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এখলাস মিয়া ছাড়াও গত বুধবার দুজন এবং বৃহস্পতিবার একজন মুসল্লি মারা যান।
শুক্রবার শুরু হওয়া ইজতেমার প্রথম পর্ব আগামী রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে। আগামী ৯, ১০ ও ১১ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে।
Posted ২:১৮ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
দৈনিক গণবার্তা | Gano Barta