আজ, শনিবার


১৮ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যে কারণে শীতের সময় অজু-গোসলে সতর্কতা দরকার

সোমবার, ০৬ জানুয়ারি ২০২৫
যে কারণে শীতের সময় অজু-গোসলে সতর্কতা দরকার
সংবাদটি শেয়ার করুন....

ইসলাম ডেস্ক :

অজুর অঙ্গ ও ফরজ গোসলের সময় পুরো শরীর পরিপূর্ণভাবে পানি দ্বারা ভেজানো আবশ্যক, অন্যথায় পবিত্রতা অর্জিত হবে না। অজুর কোনো অঙ্গ সামান্যও শুকনা থেকে গেলে তার জন্য হাদিসে জাহান্নামের শাস্তির কথা বর্ণিত হয়েছে।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, কোনো এক সফরে আল্লাহর রাসুল (সা.) আমাদের পেছনে পড়ে গেলেন। পরে তিনি আমাদের কাছে পৌঁছলেন। এদিকে আমরা (আসরের) নামাজ আদায় করতে বিলম্ব করে ফেলেছিলাম। তাই (তা আদায় করার জন্য) আমরা অজু করা শুরু করলাম। এ সময় আমরা আমাদের পা কোনোমতে পানি দ্বারা ভিজিয়ে নিচ্ছিলাম। তখন তিনি উচ্চৈঃস্বরে বলেন, ‘সর্বনাশ! গোড়ালির নিম্নাংশগুলোর জন্য জাহান্নামের আগুন রয়েছে।’ তিনি দুই বা তিনবার এ কথা বললেন। -সহিহ বোখারি : ৯৬

আমরা অনেক সময় তাড়াহুড়া করে অজু করার কারণে পায়ের গোড়ালি শুকনা থেকে যায়, বিশেষ করে শীতকালে এ ধরনের কাজ বেশি হয়ে যায়। তাই আমাদের উচিত অজু করার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে লক্ষ রাখা, যাতে কোনো অঙ্গ শুকনা না থেকে যায়।

পবিত্রতা অর্জনে এমন উদাসীনতা কোনোভাবেই কাম্য নয়। কারণ ফরজ গোসল ও অজুর সময় কোনো অঙ্গের সামান্য থেকে সামান্য পরিমাণ শুকনা থেকে গেলে পবিত্র অর্জিত হবে না।

এ বিষয়ে আল্লামা মুহাম্মদ বিন সালেহ আল উসাইমিন (রহ.) বলেন, ‘মানুষ যদি পবিত্রতা অর্জনের অঙ্গে তৈলাক্ত বস্তু (তেল, ক্রিম) ব্যবহার করে তাহলে দেখতে হবে, যদি ওই তৈলাক্ত বস্তুটি জমাট বাধা ও আবরণবিশিষ্ট হয় তাহলে পবিত্রতা অর্জনের আগে অবশ্যই তা দূর করতে হবে। যদি তৈলাক্ত বস্তু সেভাবেই জমাট বাধা অবস্থায় থেকে যায় তাহলে তা চামড়া পর্যন্ত পানি পৌঁছতে বাধা দেবে। এতে তখন পবিত্রতা শুদ্ধ হবে না। কিন্তু যদি তৈলাক্ত বস্তুটির কোনো আবরণ না থাকে কিন্তু পবিত্রতার অঙ্গগুলোর ওপর সেগুলোর চিহ্ন অবশিষ্ট থেকে যায়, তাহলে তাতে কোনো ক্ষতি নেই।

কিন্তু এ অবস্থায় ওই অঙ্গের ওপর হাত ফিরিয়ে দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। কেননা সাধারণত তৈলাক্ত বস্তু থেকে পানি আলাদা থাকে। সুতরাং হতে পারে, পবিত্রতার ক্ষেত্রে পুরো অঙ্গে পানি পৌঁছবে না।

যেসব জিনিস অজু-গোসলের সময় শরীরে পানি পৌঁছতে বাধা দেয় না, সেগুলো হলো- শরীরে সরিষা, তিল, কালিজিরা ইত্যাদির তেল, অলিভ অয়েল, বডি লোশন, ক্রিম, লিকুইড ভ্যাসলিন, গ্লিসারিন ইত্যাদি। কারণ এগুলো দ্বারা চামড়ার ওপর প্রলেপ পড়ে না বা আবরণ তৈরি হয় না। তবে এ অবস্থায় অজু বা গোসলের সময় যথাসম্ভব হাত দিয়ে অজুর স্থানগুলো ও শরীরের বিভিন্ন স্থান ভালো করে ঘষে দেওয়া উচিত, যেন যথাস্থানে পানি পৌঁছতে সন্দেহ না থাকে। যেমন ঠাণ্ডার সময় অজু বা গোসল করলে অজুর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো এবং শরীরের বিভিন্ন অংশ ভালোভাবে ঘষে নিতে হয়।

অনুরূপ নারীদের মেহেদির রং, সাধারণ পাউডার, চোখের সুরমা, আতর-সেন্ট ইত্যাদি চামড়ায় পানি পৌঁছতে কোনো বাধা দেয় না। তবে বর্তমানে বাজারে কিছু কেমিক্যালযুক্ত কৃত্রিম টিউব মেহেদি পাওয়া যায়, যেগুলো চামড়ায় পাতলা আবরণ সৃষ্টি করে। তা ছাড়া নেইল পলিশ, কিছু লিপস্টিক ব্যবহার করলেও চামড়ার ওপর প্রলেপ পড়ে যায়। যার কারণে চামড়া পর্যন্ত পানি পৌঁছতে বাধাগ্রস্ত হয়। এ ধরনের ক্ষেত্রে অজু-গোসলের আগে এগুলোকে ভালোভাবে তুলে নিতে হবে।

দেয়ালে লাগানোর রং, মবিল, আঠাজাতীয় বস্তু ইত্যাদি শরীরে লাগলে তা জমাটবদ্ধ হয়ে আবরণ সৃষ্টি করে। সুতরাং অজু-গোসলের আগে এগুলো তুলে ফেলতে হবে।

যেসব ক্রিম, চর্বিজাতীয় ও তৈলাক্ত বস্তু শরীরে লাগানোর ফলে চামড়ার ওপর প্রলেপ বা আবরণ পড়ে সেগুলো ব্যবহার করলে অবশ্যই অজু-গোসলের সময় সেই আবরণ ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৪:০০ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০৬ জানুয়ারি ২০২৫

দৈনিক গণবার্তা |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

সম্পাদকঃ শাহিন হোসেন

বিপিএল ভবন (৩য় তলা ) ৮৯, আরামবাগ, মতিঝিল, ঢাকা ।

মোবাইল : ০১৭১৫১১২৯৫৬ ।

ফোন: ০২-২২৪৪০০১৭৪ ।

ই-মেইল: ganobartabd@gmail.com