ঈদুল আযহা মুক্তির উদ্দেশ্যে নির্মিত শাকিব খানের ‘তাণ্ডব’ সিনেমার শুটিং চলছে রাজশাহীতে। শুটিং সেটে মনির হোসেন নামের এক স্টান্টম্যানের মৃত্যু হয়েছে (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) গত শনিবার (৩ মে)। সেদিন বিকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানিয়েছেন পরিচালক রায়হান রাফী।
এদিকে ফাইটার জুম্মান বলেন, আমরাও শুনেছি সকাল থেকে কাজ করছিল মনির। সকালেই সে স্ট্রোক করেছিল। কিন্তু সে বিষয়টি কাউকে জানায়নি। পরে কিছুটা সুস্থ হলে আবার কাজ শুরু করে। কিন্তু বিকেলের দিকে আবার অসুস্থ হলে সবাই মিলে হাসপাতাল নিয়ে যায়, কিন্তু তখক্ষনে সে সবাই ছেড়ে চলে গিয়েছিল।’
শাকিব খানের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের শাকিব খানের সিনেমার শুটিং করছিল মনির। কিন্তু তার মৃত্যুর খবর শুনে একবারও ছেলেটিকে দেখতে আসেননি তিনি। এরআগেও শাকিব খান এমন কাজ করেছেন।’
‘তান্ডব’ সিনেমার পোস্টারে শাকিব খান ও অকালপ্রয়াত স্টান্টম্যান মনির
জুম্মানের এমন মবন্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শাকিব খানকে নিয়ে নানা সমালোচনা চলছে। এবার বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন নায়িকা রত্না।
ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে শাকিব খানের উদ্দেশ্যে তিনি লেখেন, ‘সুপ্রিয় খান সাহেব! ঐযে যুগের পর যুগ হাততালি পেয়ে যান, ভিলেনের উপরে উড়ে এসে পড়েন, নায়িকাকে ভিলেন থেকে বাঁচান। সেই পুরো কৃতিত্ব কিন্তু দর্শক না জানলেও আপনার আমার জানা। কাল আপনারই তান্ডব সিনেমার শুটিং সেটে স্ট্যানম্যান মনির অসুস্থ হয়ে পড়ে পরবর্তীতে মৃত্যু হয়। শুনেছি আপনি একটিবারও ছেলেটির কাছে হসপিটালে বা ছেলেটির পরিবারের কাছে এখন পর্যন্ত যাননি। এগুলো নতুন নয় আপনার, আপনি কখনোই পেছনের গল্প মনে রাখেন না, মনে রাখার দরকারও নেই। আপনার প্রেমিকা প্রায়োরিটি বরাবরই ছিল নায়িকা সিলেকশনের ক্ষেত্রেও, অনেক উঠতি নায়িকার স্বপ্ন ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল, বেকারত্বকে বরণ করে আপনার চাইতেও অনেক কর্মঠ নায়িকা দেশ ছেড়েও চলে গিয়েছিল, এটা অবশ্য আপনার দোষ না, পর্দার নায়ক হিসেবে আপনি সত্যিই অতুলনীয় অসাধারণ, সেটা নিয়ে দুঃখ নেই।’
এরপর রত্না লেখেন, ‘এখন বাস্তবের নায়ক হয়ে দেখান, সিনেমা থেকে অনেক পেয়েছেন অনেক নিয়েছেন। এখন দিতে শিখুন। যতই ইংরেজি শিখেন, পাকিস্তানি ভাষা বলতে পারেন আর হিন্দি ভাষা বলে বাহবা পান। আপনি কিন্তু বাংলা চলচ্চিত্র আর বাংলাদেশেরই একজন মানুষ। আজকের এই শাকিব খান হওয়ার পেছনে যে অবদানগুলো মানুষগুলোর ছিল আর কেউ না জানলেও আপনি কিন্তু জানেন। সব ভুলে যান দুঃখ নেই কিন্তু যারা এখনো আপনার সাথে লেগে আছে, তাদেরকে ভুলে যাবেন না, তাদের পাশে একটু দাঁড়াবেন আশা করছি। স্টান্টম্যান মনিরের পরিবারের জন্য অবশ্যই কিছু করবেন প্রত্যাশা রাখলাম।’
প্রসঙ্গত, মনির ঢাকার নারায়ণগঞ্জে বসবাস করতেন এবং কয়েক বছর ধরেই চলচ্চিত্রে স্টান্টম্যান হিসেবে কাজ করছিলেন। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে সিনেমায় দুঃসাহসিক দৃশ্যগুলোতে নীরবে কাজ করে গেছেন। পর্দার পেছনে থেকে নায়ক-নায়িকাদের রক্ষা করে ঝুঁকিপূর্ণ সব দৃশ্য নিঃশব্দে করে গিয়েছেন