
প্রকাশের তারিখঃ মার্চ ৪, ২০২৫, ১০:০৯ পূর্বাহ্ণ
আমানত হারাতে বসেছেন নিশান এনজিওর ৫ শতাধিক গ্রাহক

আক্তার হোসাইন, মাধবপুর প্রতিনিধি :
হবিগঞ্জের মাধবপুরে নিশান স্বাস্থ্য ও পরিবেশ উন্নয়ন সোসাইটি নামে গ্রাহকের ১৫৯ কোটি টাকা ৫ কর্মকর্তার পকেটে। এতে আমানত হারাতে বসেছেন ওই এনজিওর গ্রাহকরা। আমানত হিসাবে জমা রাখা প্রায় ৫শতাধিক গ্রাহক টাকা ফেরত না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর গ্রাহকের আমানতের বিপরীতে লভ্যাংশ হঠাৎ বন্ধ করে দিলে গত ২২ ডিসেম্বর/২৪ গ্রাহকরা নিশান এনজিওর প্রধান কার্যালয় উপজেলার তেলিয়াপাড়ায় বিক্ষোভ ও অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরিস্থিতি সামলাতে ৩ জনের পাসপোর্ট জব্দ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: জাহিদ বিন কাসেম ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুলাহ আল মামুন সাথে ছিলেন স্হানীয় ইউপি চেয়ারম্যান পারভেজ হোসাইন চৌধুরী। চাপের মুখে পড়ে সংস্থাটির চেয়ারম্যান জালাল উদ্দীন গ্রাহকের জমা টাকার লভ্যাংশ ও আমানত ৩ মাসের মধ্যে পরিশোধ করবেন বলে আশ্বাস দেন। পরে গোপনে গত ২৭ জানুয়ারী পাসপোর্টের আবেদন করে ২৯ জানুয়ারী পাসপোর্ট সংগ্রহ করে ভারতে ভিসার জন্য আবেদন করেন। তৎক্ষনাৎ খবর পেয়ে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সংস্থাটির কর্মকর্তারা যেন দেশ ত্যাগ না করতে পারেন সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য মাধবপুর থানা, বিঞ্জ জেলা ম্যাজিস্টেট ও পুলিশ সুপারকে লিখতভাবে অবগত করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: জাহিদ বিন কাসেম। অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০১১ সালে সমাজসেবা ও সমবায় অধিদপ্তর থেকে অনুমোদন নিয়ে নিশান স্বাস্থ্য ও পরিবেশ উন্নয়ন সোসাইটির কার্যক্রম শুরু করে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অনুমোদন ছাড়াই নিরাপত্তা সঞ্চয় ও মেয়াদী সঞ্চয় সংগ্রহ করে। গত ৮ বছর ধরে এই এনজিওর চেয়ারম্যান ও পরিচালকরা স্ট্যাম্পের মাধ্যমে কর্জ টাকার বিপরীতে প্রতি লক্ষে ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা লভ্যাংশ হারে আমানত গ্রহন করে আসছে।মোটা অংকের লাভের প্রলোভনে এ অঞ্চলের প্রায় ৫ শতাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে ১৫৯ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে সংস্থাটি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংস্থাটির এক কর্মকর্তার কাছে থকে জানা যায়, উল্লিখিত টাকাগুলোর মধ্যে নির্বাহী পরিচালক মঈন উদ্দীন বেলাল ৮৪ কোটি টাকা, চেয়ারম্যান জালাল উদ্দীন ১৭ কোটি, ডেপুটি ডিরেক্টর আব্দুল জলিল সায়েম ৪০ কোটি, মাইক্রোক্রেডিট ডিরেক্টর মাসুদ রানা ৮ কোটি, ডেপুটি ডিরেক্টর সালমান ১০ কোটি টাকা আত্নসাধ করেছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জাহিদ বিন কাসেম বলেন, গোপন সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে যখন জানতে পারলাম, নিশান এনজিওর কর্তৃপক্ষরা গোপনে পাসপোর্ট ও ভিসার জন্য আবেদন করে পরে তৎক্ষনাৎ পুলিশ প্রশাসন ও জেলাপ্রশাসকে লিখিতভাবে অবগত করি। পরে দেখা যায়,দেশ ত্যাগ করেতে না পেরে পুনরায় মঈন উদ্দীন বেলাল তার ফেইসবুক পেইজে তার কৃতকর্মের জন্য উপজেলাবাসীর উদ্দেশ্য ক্ষমা চান। এ ব্যপারে নির্বাহী পরিচালক মঈন উদ্দীন কাছে মুঠোফোনে যোগাযোগ করতে চাইলে ফোন রিসিভ করেননি। নিশান এনজিওর কর্মকর্তাদের বারবার দেশ ত্যাগের বিষয়টি নিয়ে এ অঞ্চলের গ্রাহকরা আমানত হারানোর হতাশায় দিন পার করেছেন তাছাড়া পরিচালকদের বার বার পালানোর বিষয়টি নিয়ে উপজেলাজুড়ে গ্রাহকদের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
Copyright © 2025 দৈনিক গণবার্তা. All rights reserved.