নিজস্ব প্রতিনিধি: জনগোষ্ঠী দেশের জন্য বোঝা নয়, সম্পদও বটে। সুস্থ দেহেই সুস্থ মনের বিকাশ হয়। সুস্থ জনগোষ্ঠী মানেই কর্মক্ষম। শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য খেলাধুলার বিকল্প নেই। পরিবার ও রাষ্ট্রের উচিত শিশুর সুস্থভাবে বেড়ে ওঠা নিশ্চিত করা। দুর্বল ও শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তি কেবল পরিবারের বোঝা নয়, রাষ্ট্রের বোঝা। শিশুকে শারীরিকভাবে গড়ে তুলতে পুষ্টিকর খাবার যেমন প্রয়োজন, শারীরিক গঠনের জন্য খেলাধুলার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। শারীরিক ব্যয়াম না হলে শিশু মুটিয়ে যেতে পারে। বর্তমান সময়ে স্থূলতা ব্যাপক হারে বাড়ছে। শিশু এখন খেলার মাঠে খেলতে পারে না। ঘরে বসে কম্পিউটার-মোবাইল ডিভাইসে সময় কাটায়, গেম খেলে। কিন্তু এ গেমের (খেলা) শিশুর লড়াকু মেজাজ, সবল পেশি গড়ে ওঠে না। আধুনিক যুগে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র সীমিত হয়ে আসছে। প্রত্যেকে ব্যক্তিগতভাবে জীবিকা নির্বাহের প্রচেষ্টায় রত। এ ক্ষেত্রে শারীরিক সক্ষমতার প্রয়োজন অনস্বীকার্য। শারীরিক দৃঢ়তা না থাকলে কঠোর পরিশ্রম করা সম্ভব নয়। পরিশ্রমই সাফল্যের চাবিকাঠি। তাই সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে প্রত্যেককে ব্যক্তিগতভাবে সুস্থ হতে হবে।
সুস্থ দেহের সঙ্গে সুস্থ মন অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। এর একটির অনুপস্থিতিই সার্বিক সুস্থতাকে ব্যাহত করে। এ ক্ষেত্রে অবহেলা করলে পরবর্তী সময়ে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। শারীরিকভাবে দৃঢ় ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। কম সময়ে তাকে কোনো ব্যাধি কাবু করতে পারে না। শারীরিক সুস্থতার সঙ্গে বেশ কয়েকটি বিষয় জড়িত। শারীরিকভাবে দৃঢ় না হলে অল্পতেই হাঁপিয়ে উঠতে হয়। বেশি সময় কাজ করা সম্ভব নয়। কেবল কায়িক নয়, বুদ্ধিবৃত্তিক কাজেও পরিশ্রম করতে হয়। কয়েক বছর আগে নগরবাসী যেরকম স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারত, এখন তা পারছে না। শিশুরা এখন খেলতে পারছে না, খেলার মাঠ নেই। কতক্ষণ আর পড়া যায়, বাধ্য হয়ে ইলেকট্রনিক ডিভাইসে গেম খেলতে হয়। অথচ এটি তাদের কোনো উপকারেই আসছে না। খেলার মাঠ বাড়ানোর কথা বলছেন সবাই। কিন্তু চাইলেই খেলার মাঠের ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। এর জন্য চাই রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ। গতকাল শেয়ার বিজে প্রকাশিত ‘গুলশান মাঠে অবৈধ স্থাপনা তৈরি ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধের আহ্বান’ শীর্ষক প্রতিবেদন আমাদের হতাশ করে। সরকার রাজধানীর গুলশানের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ স্মৃতি মাঠ ও পার্কটি সর্বসাধারণের জন্য উš§ুক্ত করে দিয়েছিল। কিন্তু গুলশান ইয়ুথ ক্লাব নামীয় সংগঠন মাঠ ও পার্কে বেআইনিভাবে অবকাঠামো নির্মাণ করে বিভিন্ন বাণিজ্যিক কার্যক্রম করে আসছে। এ মাঠ ও পার্কে স্থাপিত সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, মাঠে শিশুসহ সব সাধারণ নাগরিকের প্রবেশ নিশ্চিত, মাঠের ব্যবস্থাপনা সিটি করপোরেশন দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করাসহ কয়েকটি দাবি জানিয়েছে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ স্মৃতি পরিষদ।
রাজধানীতে অনেক খেলার মাঠের অধিকাংশই বেদখল হয়ে গেছে। ফলে শিশু-কিশোররা খেলাধুলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ স্মৃতি মাঠ ও পার্কসহ বেদখল হয়ে যাওয়া সরকারি মাঠগুলো পুনরুদ্ধার ও সংস্কার করে সেগুলো খেলার উপযোগী করতে সিটি করপোরেশন শিগগির উদ্যোগ নেবে বলেই প্রত্যাশা।