নিজস্ব প্রতিনিধি: গাজীপুরের কালিয়াকৈরে গতকাল সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা
সরকার নির্ধারিত বেতনের দাবিতে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বিক্ষোভ করেছেন খাদ্যপণ্য উৎপাদনকারী একটি কারখানার শ্রমিকরা। এ সময় তারা মহাসড়ক অবরোধ করলে কয়েক কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়। শ্রমিকদের অভিযোগ, পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটা, সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। এতে কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়েছেন।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপক মজুমদার বলেন, ‘শ্রমিকদের আমরা বোঝানোর চেষ্টা করেছি, কিন্তু তারা শোনেনি। মহাসড়কে যানজট সৃষ্টি করে কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করে। পরে লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করা হয়েছে।’
শ্রমিক ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সকাল সাড়ে ৭টায় কোকোলা ফুড প্রডাক্ট লিমিটেডের শ্রমিকরা কারখানার গেটের সামনে অবস্থান নিয়ে সরকার ঘোষিত নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের দাবি জানান। এ সময় কারখানাটির ভেতরে অবস্থান করা স্টাফ ও কিছু শ্রমিক বাইরে অবস্থান করা শ্রমিকদের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পরে বাইরে অবস্থান করা শ্রমিক এবং কারখানার ভেতরে থাকা শ্রমিকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ইটপাটকেল নিক্ষেপ হয়।
কোকোলা ফুড প্রডাক্ট লিমিটেড কারখানার শ্রমিক আরাফাত হোসেন বলেন, ‘সব কারখানায় শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন ১২ হাজার ৫০০ টাকা দেয়া হলেও আমাদের কারখানা দিচ্ছে না। আমাদের কারখানার শ্রমিকরা সর্বনিম্ন বেতন পাচ্ছেন ছয় হাজার ৭০০ টাকা।’
কারখানা শ্রমিক সানোয়ার হোসেন বলেন, ‘চলতি মাসের শুরু থেকেই আমরা সরকার ঘোষিত বেতন দেয়ার দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ দেই, দিচ্ছি বলে সময় নিচ্ছে। এখন পর্যন্ত সেই বেতন আমরা পাইনি। বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছি। পুলিশ আমাদের ওপর হামলা করেছে। এতে আমাদের কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়েছেন।’
কারখানার ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আনিসুর রহমান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার থেকে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা নিয়ে আমাদের সঙ্গে কথা হচ্ছে। বেশ কয়েকবার আলোচনা করে বেতনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তাদের বেতন ছিল ৬ হাজার ৭০০ টাকা। ১ হাজার ৩০০ টাকা বাড়িয়ে এখন ৮ হাজার টাকা করা হয়েছে। শনিবার কারখানা বন্ধ রাখা হয়েছিল। বেতনের বিষয়ে সমাধান হওয়ার পর রোববার থেকে শ্রমিকরা কাজও করছেন। কিন্তু গতকাল সকালে বহিরাগত কিছু শ্রমিকের উস্কানিতে বিক্ষোভ হয়েছে। সেখানে আমাদের কোনো শ্রমিক ছিল না।’