ফুলবাড়ী প্রতিনিধি (দিনাজপুর) : আজ ২৬ আগস্ট, ফুলবাড়ী ট্র্যাজেডি দিবস। ২০০৬ সালের এই দিনে এশিয়া এনার্জির বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে ৩ জন নিহত ও আহত হন শতাধিক। এরপর থেকে প্রতিবছর দিনটি ‘ফুলবাড়ী ট্র্যাজেডি দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। আজ হতে প্রায় ১৯ বছর আগে একটি বিদেশি সংস্থার সাথে কয়লাখনি নিয়ে চুক্তি করে তৎকালীন সরকার। পরে ২০০৫ সালে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে স্যাফট বা টানেল পদ্ধতিতে উত্তোলন শুরু হয়। একি সময়ে এশিয়া এনার্জির সঙ্গে সরকার ৩০ বছরের জন্য একটি চুক্তি করে। ওই চুক্তিতে উল্লেখ করা হয় যে, উত্তোলিত কয়লার মাত্র ৬ শতাংশ পাবে বাংলাদেশ, আর ৯৪ শতাংশ পাবে এশিয়া এনার্জি, যার ৮০ শতাংশ রপ্তানি করা হবে।
প্রস্তাবিত এ প্রকল্পে কৃষি, পরিবেশ ও জনবসতি হুমকির মুখে পড়বে জানিয়ে ‘ফুলবাড়ী রক্ষা কমিটি’ আন্দোলনে নামে। ২০০৬ সালের ২৬ আগস্ট জাতীয় তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা কমিটির নেতারা ফুলবাড়ীর নিমতলায় সভা করেন। সমাবেশ শেষে বিক্ষুব্ধ জনতা এশিয়া এনার্জির কার্যালয় ঘেরাও করতে গেলে তৎকালীন বিডিআর গুলি চালায়। এতে তিনজন নিহত এবং দুই শতাধিক মানুষ আহত হন।
ঘটনার পর আন্দোলনকারীরা ৬ দফা দাবি পেশ করে, যার মধ্যে ছিল এশিয়া এনার্জিকে বহিষ্কার এবং দেশে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন নিষিদ্ধ করা। সারাদেশে হরতাল ও বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে উত্তরাঞ্চল।
দিবসটি উপলক্ষে আজ তেল-গ্যাস-খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি প্রতিবছরের মতো নানা কর্মসূচি পালন করে, সকালে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এরপর ফুলবাড়ি যমুনা ব্রিজ সংলগ্ন শহীদ মিনার চত্বরে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ ও বিদ্যুৎ বন্ধ রক্ষা কমিটির জাতীয় নেতা অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ফুলবাড়ী আন্দোলনের অন্যতম নেতা সাবেক মেয়র মানিক সরকার, এস এম নুরুজ্জামান, হামিদুল হক সরকার সহ অন্যান্য নেতৃবৃত্ত। সভাপতিত্ব করেন সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েল।