গণবার্তা রিপোর্টার : প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, বর্তমান যুগ চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের। এ সময়ে প্রযুক্তিগত সক্ষমতা, তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞান এবং উদ্ভাবনী দক্ষতা ছাড়া টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই শুধু তত্ত্বীয় জ্ঞান নয়, শিক্ষাব্যবস্থায় যুগোপযোগী কারিকুলাম, কার্যকর পাঠদান পদ্ধতি এবং গবেষণাকে গুরুত্ব দিতে হবে। শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে গবেষণার বিকল্প নেই। গবেষণাভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা প্রয়োগ করে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব। শনিবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর সেনানিবাস এলাকার সেনাপ্রাঙ্গন অডিটোরিয়ামে ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের (ইউএপি) ১১তম সমাবর্তনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।উপদেষ্টা বলেন, আজকের দিনটি নবীন স্নাতকদের জীবনে একটি গর্বের মুহূর্ত। তবে এই অর্জনের মূল্য তখনই প্রকৃত অর্থে প্রমাণিত হবে, যখন তা সমাজ ও দেশের কল্যাণে ব্যবহৃত হবে। যে জ্ঞান ও দক্ষতা শিক্ষার্থীরা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে অর্জন করেন, তা কেবল নিজের উন্নয়নে নয়, বরং বৃহত্তর সমাজ ও জাতির কল্যাণে ব্যবহার করতে হবে। সেই চেতনা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে নতুন প্রজন্মকে।
বিশেষ চমক হিসেবে সমাবর্তনে ভিডিও বার্তা দেন মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির বিন মোহাম্মদ। তিনি উল্লেখ করেন, সার্টিফিকেট শুধু এক টুকরো কাগজ নয়, এটি তোমার প্রতিশ্রুতির দলিল। একটি শিক্ষিত, ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গঠনে তোমাদের ভূমিকা এখন শুরু হচ্ছে। পরিবার, সমাজ এবং দেশের কাছে তোমাদের দায়বদ্ধতা আজ আরো বেড়ে গেছে।সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন উল্কাসেমি প্রাইভেট লিমিটেডের প্রেসিডেন্ট ও সিইও প্রকৌশলী মোহাম্মদ এনায়েতুর রহমান। তিনি বলেন, আজকের বিশ্ব চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে প্রবেশ করেছে, যেখানে প্রযুক্তি, উদ্ভাবন ও নেতৃত্ব একইসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ। এই বাস্তবতায় কেবল চাকরি নয়, নেতৃত্বের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। উদ্যোক্তা ও প্রযুক্তি নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, ব্যর্থতা কখনো চূড়ান্ত নয়, সফলতাও নয় শেষ গন্তব্য। প্রতিনিয়ত শেখা, নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়া এবং সমাজে মূল্য সংযোজন করাই প্রকৃত সাফল্য। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ, বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারপার্সন স্থপতি মাহবুবা হক, উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান এবং উপাচার্যের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মহিউদ্দিন আহমেদ ভূঁইয়া। জানা গেছে, এ বছর সমাবর্তনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর মিলিয়ে ডিগ্রি পেয়েছেন ১ হাজার ৯৭৫ শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ একাডেমিক সম্মান ‘চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল’ পেয়েছেন তিনজন মেধাবী শিক্ষার্থী। তারা হলেন —ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের গাজী শাহবাজ মোহাম্মদ এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিদীতা সরকার দিবা ও রিপা রাণী বিশ্বাস। এছাড়াও 'ভাইস-চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল' পেয়েছেন আরো ১৫ শিক্ষার্থী।