নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রতি মাসে জেট ফুয়েলের (উড়োজাহাজের জ্বালানি) দাম সমন্বয় করার ঘোষণা থাকলেও জুনে সমন্বয় করা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ।
তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের উপর নজর রাখা হচ্ছে। হরমুজ প্রণালী নিয়েও টেনশন দেখা যাচ্ছে, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে জুলাই মাসে জেট ফুয়েলের দাম সমন্বয় করা হবে। হরমুজ প্রণালী সচল থাকলে এক রকম, আর যদি সংকট বেড়ে যায় তাহলে চিত্র বদলে যেতে পারে।
হরমুজ প্রণালী বন্ধে ইরানের পার্লামেন্ট ইতোমধ্যেই অনুমোদন দিয়েছে। অন্যদিকে ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার ‘কোসউইজডম লেক’ ও ‘সাউথ লয়্যালটি’ নামের দুটি খালি সুপারট্যাংকার হরমুজ প্রণালিতে প্রবেশ করলেও তারা আচমকা গন্তব্য বদলে ফেলে। দুটি জাহাজের প্রতিটিতে প্রায় ২০ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল পরিবহনে সক্ষম।
চলমান উত্তেজনার মধ্যে জাহাজগুলোর ফিরে যাওয়া মধ্যপ্রাচ্যে বিকল্প রুটে চলাচল শুরুর প্রথম ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে। চলমান সংকট সরবরাহ ও পরিবহনব্যবস্থায় কী ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে, সে বিষয়ে জাহাজের মালিক ও ব্যবসায়ীরা সতর্কভাবে নজর রাখছেন বলে মনে করছে ব্লুমবার্গ।
পারস্য সাগর ও ওমান সাগরের মধ্য সংযোগ তৈরি করেছে হরমুজ প্রণালী। জ্বালানি তেল পরিবহনের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রুট হরমুজ প্রণালী ৩৯ কিলোমিটার দীর্ঘ। বিশ্বের মোট জ্বালানির এক পঞ্চমাংশ এবং এলএনজির এক-তৃতীয়াংশ এই প্রণালী দিয়ে পরিবহন হয়ে থাকে।
হরমুজ প্রণালী বন্ধ হয়ে গেলে স্বাভাবিকভাবেই জ্বালানি তেলের পরিবহন খরচ বেড়ে যাবে। ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের পর জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে গেছে। সোমবার ব্রেন্ট ক্রড অয়েলের দাম ২ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৯ দশমিক ১২ ডলার আর যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত তেলের দাম ২ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৭৫ দশমিক ৯৮ ডলার। ইরান কৌশলগতভাবে হরমুজ প্রণালিতে জাহাজ চলাচলে বাধা দিলে ব্রেন্ট তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি কমপক্ষে ১০০ ডলার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে।
জেট ফুয়েলের দাম এতোদিন বিপিসি নির্ধারণ করে আসছিল। ২০২৪ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ফার্নেস অয়েল ও জেট এ-১ এর দাম নির্ধারণের এখতিয়ার বিইআরসির উপর ন্যস্ত করা হয়েছে। ওই প্রজ্ঞাপনের পর গত ২৩ মার্চ প্রথমবারের মতো জেট ফুয়েলের দাম নির্ধারণের গণশুনানি গ্রহণ করে বিইআরসি। আর ১৩ মে দাম ঘোষণা করে কমিশন। তখন বলা হয়েছিল, প্রতিমাসে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে।
বিইআরসি চেয়ারম্যান বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, জুন মাসের প্রথমদিকে লম্বা ছুটি থাকায় বিষয়টি পিছিয়ে যায়। আর এখন ইরান-ইসরায়েল সংকটের কারণে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।