সাতক্ষীরার নানা জাতের গ্রীষ্মকালীন সু-স্বাধু আমকে ঘিরে গড়ে উঠেছে এক দীর্ঘদিনের ভয়াবহ সিন্ডিকেট। সেক্ষেত্রে এখানে আম প্রাকৃতিক উপায়ে পরিপক্কতা লাভ করার আগে কৃতিম উপায়ে পাকিয়ে তোলে এই বিষক্রিয়া সিন্ডিকেট সদস্যরা। জানা যায়, দরদাম ঠিক করে শতশত মণ আম ঘরে বিষক্রিয়া সিন্ডিকেট সদস্য কৌশলে কেমিক্যাল স্প্রে করছে। প্রথমে বিষযুক্ত ঔষধ ছিটিয়ে আম কিছুটা শুকিয়ে গেলে ক্যারেট ভর্তি করে। দীর্ঘ অনুসন্ধানে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাতক্ষীরা বড় বাজারের এই কেমিক্যাল বা বিষক্রিয়া সিন্ডিকেটের মূল হোতাকে খুঁজতে গেলে উঠে আসে মেসার্স মল্লিক ভান্ডার এর স্বত্বাধিকারী ও বর্তমান বাজার সমিতির সাধারণ সম্পাদক রহিম ওরফে বাবুর নাম। ব্যবসায়ীদের মধ্যে উপস্থিত থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, সেক্রেটারি আব্দুর রহিম বাবু, প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সাহেবের যোগসাজশে এই অবৈধ বানিজ্য পরিচালিত হচ্ছে। এই বিষাক্ত রাসায়নিক স্প্রেরের নাম হলো কার্বোহাইড্রেট। এটার কাজ হলো অপরিপক্ক, আম, কলা সহ যেকোনো ফল কে নরম করা এবং ২৪ ঘন্টার ভিতর লাল রঙ তৈরি করা। কার্বোহাইড্রেট মিশ্রিত ফল ২৪ ঘন্টার বেশী স্থায়ী হয়না। এই বিষক্রিয়া যুক্ত ফল আবার ২৪ ঘন্টার পরে আবার পঁচতে শুরু করে। আর ঠিক তখনই প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ব্যবসায়ীরা ফলকে পচন রোধ করতে ফরমালিন ব্যবহার করে থাকে। আর এই উচ্চ মাত্রার রাসায়নিক ফরমালিন ব্যবহারের কারণে ফল খেয়ে মানব দেহে মরণ ব্যাধি ক্যান্সার সহ বিভিন্ন জটিল ও কঠিন রোগ সৃষ্টি হয়। দীর্ঘ অনুসন্ধানে পাইকারি আম ক্রেতা সেজে সরজমিনে গিয়ে প্রশ্ন করলে এই সিন্ডিকেটের এক সক্রিয় সদস্য বলেন, আপনারা এভাবে এই আম বিক্রি করতে পারবেন না। আমরা স্প্রে করে দিবো তারপর আমে কালার আসবে। বিক্রি না হলে ফরমালিন মেশানো লাগবে। এখানে হরহামেসায় এগুলো চলে। এতে মণ প্রতি একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিতে হবে। যাতায়াতের জন্য ট্রাকের ভাড়া আলাদা করে বেশি ভাড়া দিতে হবে। অতঃপর তিনি ফল বাজার সমিতির সাঃ সম্পাদক আব্দুর রহিম ওরফে বাবুর সাথে কথা বলতে বলেন। এ বিষয়ে অভিযুক্তদের বক্তব্যে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসিকে বার বার ফোন করলেও তিনি কলটি রিসিভ করেননি। অপরদিকে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও দৈনিক সাতনদী পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক মোঃ হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, এই বিষয়ে অবগত নাই। আর উক্ত অসাধু ব্যবসায়ীদের বিষয়ে তিনি কোন কিছুই জানেন না। পাইকারি ফল বাজার সমিতির সাঃ সম্পাদক আব্দুর রহিম ওরফে বাবু বলেন, গত নির্বাচনে যারা পরাজিত হয়েছেন হয়তোবা তারা একটা মিথ্যাচার ছড়াচ্ছে। আমি এই কর্মকান্ডে লিপ্ত নাই। তবে কেমিক্যাল দিয়ে অনেকেই এ কাজ করছে বলে সত্যতা প্রকাশ করেন। এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, এই বিষয়ে আমরা ধরতে পারবো না আমরা শুধু সেবা প্রদান করে থাকি। এই বিষক্রিয়া সিন্ডিকেট কেমিক্যাল দিয়ে থাকে কিছুটা অনুমোদন সরকার দিয়েছে। কিন্তু এটা পরিমানের উপর নির্ভর করে। আর ফরমালিন নিঃসন্দেহে এটা একটি জঘন্য অন্যায়। আমাদের কাছে কোন মেশিন নেই। তবে প্রশাসিক তৎপরতায় সহায়তা করে থাকি। সাতক্ষীরা জেলা ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ নাজমুল হাসান বলেন, এ বিষয়ে আপনি কৃষি কর্মকর্তার সাথে কথা বলেন এই দায়িত্ব জেলা প্রশাসক কৃষি কর্মকর্তার উপর দিয়েছেন। আর এখানে কোন অনিয়ম হলে আপনি নিউজ করতে পারেন। এটা অবশ্যই ভালো উদ্যোগ। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কতৃপক্ষের জেলা খাদ্য অফিসার মোঃ আশরাফুল আলম বলেন, কেমিক্যাল ইথোফেন অপরিপক্ক আম পাকানোর জন্য অপরাধের কয়েকটি ধারা আছে। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ দুই (০২) বছরের জেলসহ সর্বোচ্চ চার (০৪) লাখ টাকা জরিমানা প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে। এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা তুজ জোহরা এই অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সঠিক তথ্য প্রমাণ পেলে তদন্ত পূর্বক কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান।
এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।