নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) শিল্পনগরীতে জুয়েলারি শিল্পের কারখানা স্থাপনে জমি বরাদ্দের আশ্বাস দিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি। বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) সহসভাপতি মো. রিপনুল হাসানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ আশ্বাস দেন। এ সময় শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা থেকে ১ ঘণ্টার দূরত্বে নতুন একটি বিসিক শিল্পনগরী করা হয়েছে। এটা একটা সুন্দর জায়গা, ঢাকা-সিলেট হাইওয়ের পাশে। বর্তমানে তাঁতীবাজারে যে শিল্প-কারখানাগুলো রয়েছে, সেগুলো সেখানে চলে যেতে পারবে। আমি আপনাদের পাশে আছি।’
বৈঠকে বাজুসের পক্ষ থেকে আট প্রস্তাব দেয়া হয়। প্রস্তাবগুলো হলো জুয়েলারি শিল্পকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে নতুন নতুন শিল্প-কারখানা স্থাপনের লক্ষ্যে স্বর্ণ পরিশোধনাগার ও জুয়েলারি শিল্পে ব্যবহৃত মেশিনারিজ আমদানিতে শুল্ক কর অব্যাহতি প্রদানের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে জুয়েলারি শিল্পের কারখানা স্থাপনের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জমি বরাদ্দ দেয়া এবং স্বর্ণের গুণগত মান ও ভোক্তা অধিকার নিশ্চিতকল্পে বাজুস ও বিএসটিআইয়ের তত্ত্বাবধানে দেশের প্রতিটি জেলায় গোল্ড টেস্টিং ল্যাব ও হলমার্ক সেন্টার স্থাপন, ডায়মন্ডের গুণগতমান ও গ্রাহক প্রতারণা রোধে বাজুস ও বিএসটিআইয়ের তত্ত্বাবধানে সব জেলায় আধুনিক ডায়মন্ড টেস্টিং ল্যাব স্থাপন, বর্তমানে যেসব গোল্ড টেস্টিং ল্যাব ও হলমার্ক সেন্টার হয়েছে সেগুলোর রিপোর্ট সঠিক কিনা, তা নিয়মিত তদারকির জন্য বাজুস ও বিএসটিআইয়ের সমন্বয়ে যৌথ মনিটরিং সেল গঠন।
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, ‘বাজুস আজকে যে দাবিগুলো জানাল, সেগুলো শুনলাম এবং এ পরিপ্রেক্ষিতে আমরা একটি সময়োপযোগী পরিকল্পনা নেব।৷ কারণ আমরা দ্রুত বিশ্ববাজারে যেতে চাই, রফতানি করতে চাই, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে চাই। আমাদের সরকার ব্যবসাবান্ধব সরকার।’
ভ্যাট-ট্যাক্স বিষয়ে তিনি বলেন, ‘স্বর্ণ আমদানি করে আনতে হয়।৷ জুয়েলারি শিল্প যেহেতু আমদানিনির্ভর, তাই ভ্যাট-ট্যাক্স নিয়ে আমরা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে কথা বলব।
যেহেতু এটা প্রতিযোগিতাপূর্ণ বাজার, ভারতসহ অন্যান্য দেশ রয়েছে, সেহেতু আমাদের পর্যাপ্ত সম্ভাবনা রয়েছে।’
শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এখানে স্বল্পমূল্যে শ্রমিক পাওয়া যায়। ফলে অনেক কম খরচে জুয়েলারি তৈরি করা যায়, যা বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে সহায়ক হবে। এক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে বাজুসকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।’
বিএসটিআইয়ের মাধ্যমে যৌথভাবে নিয়মিত ওজন পরিমাপক যন্ত্র দিয়ে জুয়েলারি পণ্য পরীক্ষার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অবৈধভাবে কোনো জুয়েলারি ব্যবসায়ী যাতে ওজনে কারচুপি করতে না পারে, সেজন্য বাজুস ও বিএসটিআইয়ের মাধ্যমে যৌথভাবে নিয়মিত তদারকির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি বিমানবন্দরে বিএসটিআইয়ের একটি স্বর্ণ পরীক্ষার যন্ত্র বসানোর জন্য আলাপ আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’